পাথরঘাটায় তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে দু'পক্ষের সংঘর্ষে আহত ৫০

নিজস্ব প্রতিবেদক : তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গতরাতে নগরীর পাথরঘাটার বংশাল রোড এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এসময় স্থানীয় বাসিন্দাদের দু'পক্ষের মাঝে রাত ৮টা হতে সংঘর্ষ শুরু হয় এবং রাত বারোটা পর্যন্ত চলে। গভীর রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। ঘটনার জের ধরে টেকপাড়ায় দুস্কৃতকারীরা কয়েকটি বস্তি ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়ায় লোকজনের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাটিকে সামপ্রদায়িক রুপ দেয়ার অপচেষ্টা চলছিল।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কয়েকশ' পুলিশ ও র‍্যাব মোতায়েন করা হয়। এঘটনায় দু'জন সাংবাদিকসহ উভয়পক্ষের অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষ নিয়ে প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণে দুই ধরনের বক্তব্য পাওয়া গেছে। রাত ৯টায় বংশাল রোড ও জেলে পাড়া সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, বংশাল রোড পাঁচ পাড়ার মুখে পুলিশ ও কয়েকজন ওয়ার্ড কাউন্সিলর অবস্থান নিয়েছেন। তাদের উভয় পাশে লাঠিসোটা ও ইটপাটকেল নিয়ে দু'পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে। ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য দুস্কৃতকারীরা রাত ১০টায় টেকপাড়ায় কয়েকটি বস্তি ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের চারটি গাড়ি অকুস্থলে ছুটে যায় এবং দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। বংশাল রোড জামে মসজিদের মুসল্লি শাহ আলম মণি জানান,এশার নামাজ পড়ার সময় জেলে পাড়ায় বাজি ফাটানো হচ্ছিল। নামাজের সময় বাজি না ফাটানোর জন্য অনুরোধ করা হলে তাতে তারা ক্ষেপে যায়। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। জেলে পাড়ার বাসিন্দা বিমল দাশ জানান, বিকালে শিশু-কিশোরদের ক্রিকেট খেলার সময় কয়েকজন ছেলের মধ্যে ঝগড়া লাগে। ওই ঝগড়ার জের ধরে এয়াকুব নগর এলাকার কিছু যুবক জেলে পাড়ার এক কিশোরকে ধরে নিয়ে বংশাল রোড জামে মসজিদ সংলগ্ন স্থানে বেধে রাখে। সন্ধ্যার সময় জেলে পাড়ার কয়েকজন গিয়ে তাকে ছাড়িয়ে আনে। শিশুদের এই ঘটনা এক পর্যায়ে বড়দের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। এলাকায় চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। দু'পক্ষ দুই দিক থেকে লাঠিসোটা ও ইটপাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় বিভিন্ন পত্রিকা ও স্যাটালাইট চ্যানেলের সাংবাদিক ঘটনাস্থলে গেলে সংঘর্ষকারীদের নিক্ষিপ্ত ইটের আঘাতে সাংবাদিক উজ্জল ও সাজিবের মাথা ফেটে যায়। খবর পেয়ে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর বেবী দোভাষ, ইসমাইল বালি, সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী আশফাক, সুচরিত চৌধুরী মিন্টুসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত হন। তারা উভয় পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছিলেন। কাউন্সিলর ইসমাইল বালি পূর্বকোণকে জানান, তিনি ঘটনার খবর পাওয়ার সাথে সাথেই সেখানে হাজির হন। তবে ঘটনাটি কেন ঘটেছে তার সুনির্দিষ্ট কোন কারণ তিনি জানতে পারেননি। স্থানীয় সুচরিত চৌধুরী মিন্টু জানান, ৮টার দিকে তিনি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান। উভয় পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা করেন।

দৈনিক পূর্বকোণ, ১২/১০/১১। লিংক

No comments:

Post a Comment