দেবব্রত চক্রবর্তী বিষ্ণু
সত্যবাবু মরে গেছেন বটে কিন্তু 'সত্য' যে কখনো মরে না, 'সত্য' তার উপস্থিতি কোনো না কোনোভাবে বিলম্বে হলেও তুলে ধরে, এর প্রমাণ পুনর্বার মিলল ২০০১ সালের নির্বাচনপরবর্তী সহিংসতা সম্পর্কে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশের মধ্য দিয়ে। প্রায় এক দশকের মাথায় সেসব সহিংস ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন উত্থাপিত অভিযোগের তদন্ত করে একটি বিশদ প্রতিবেদন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে জমা দিয়েছে ২৪ এপ্রিল ২০১১ তারিখে। বিএনপি এই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে। কিন্তু তখনকার বাস্তবতা কী বলে? ২০০১ সালে জাতীয় নির্বাচনোত্তর ১ অক্টোবর থেকে ২০০২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত খুন, ধর্ষণ, হাত-পা কেটে নেওয়াসহ অগ্নিসংযোগের মতো বহু গুরুতর অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল চারদলীয় জোটের মানবতাবিরোধীদের মাধ্যমে। তখন ওই দুষ্কর্ম নির্বাচনে 'বিজয়োল্লাসের' সহিংস প্রদর্শনী হিসেবে আখ্যায়িত হয়েছিল। দেশ-বিদেশের মিডিয়ায় (কিছুসংখ্যক পত্রপত্রিকা বাদে) এসব ধারাবাহিকভাবে উপস্থাপিত হয়ে আসছিল এবং তখনকার ক্ষমতাসীনরা ওই পৈশাচিকতা, বর্বরতা, নিষ্ঠুরতা বন্ধে কোনো রকম পদক্ষেপ তো নেনইনি, উপরন্তু তাঁরা বলছিলেন, এ সবই হচ্ছে মিডিয়ার 'অতিরঞ্জন'। ওই ক্ষমতাবানরা এ কারণে তখন প্রশাসনের কিছু পদলেহী কর্মকর্তার যোগসাজশে শুধু অনেক সাংবাদিকের ওপরই কৌশলে তাঁদের হিংস্রতার বহিঃপ্রকাশ ঘটাননি, তাঁদের রোষানল থেকে বাদ যাননি সুশীল সমাজেরও অনেকেই, যাঁরা তখন মানবতার পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন। ওই নির্বাচনে পরাজিত আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ, এমনকি সংখ্যাগুরু শ্রেণীর প্রতিবাদকারীরাও বিএনপি এবং তার নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটের শরিক দলগুলোর ক্ষমতাবান হিংস্রদের নিষ্ঠুর কর্মকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন এবং আক্রান্তদের প্রতিকার চাওয়ার ক্ষেত্রটুকুও পর্যন্ত ছিল না। একটি গণতান্ত্রিক দেশে তথাকথিত গণতান্ত্রিক ও মানবতার বুলি কপচানো মানবতাবিরোধীদের উন্মাদনা সব কিছু স্তব্ধ করে দিয়েছিল। ওই সময় দায়িত্বরত প্রথমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার এসব প্রত্যক্ষ করেও উটপাখির মতো বালিতে মুখ গুঁজে ছিল, তারপর তথাকথিত বিজয়ী চারদলীয় জোট ওই উন্মাদনা চালানোর পথটি আরো প্রশস্ত্ত করে দিয়েছিল, যা স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে।
২০০৯ সালের ৬ মে উচ্চ আদালত ২০১১ সালের নির্বাচনোত্তর এসব ঘটনার জন্য বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনে সরকারকে নির্দেশ দেন 'হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ' নামের একটি সংগঠনের রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে। এ অনুযায়ী ১৯৫৬ সালের 'দ্য কমিশন অব ইনক্যুয়ারি অ্যাক্ট' অনুযায়ী সরকার একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন করে। কমিশন সরেজমিন সাক্ষ্যগ্রহণ ও আলামত সংগ্রহ এবং সে সময়ের পত্রপত্রিকার কাটিং ও আনুষ্ঠানিক বিষয়াদি পর্যালোচনা করে পাঁচ খণ্ডে মোট এক হাজার আটাত্তর পৃষ্ঠার প্রতিবেদন দাখিল করেন। এই প্রতিবেদনে পাঁচ হাজার পাঁচ শ একাত্তরটি অভিযোগ রয়েছে, যার মধ্যে খুনের অভিযোগ ৩৫৫টি। অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণের ঘটনার উল্লেখ আছে তিন হাজার ২৭০টি। রয়েছে আরো গুরুতর অভিযোগও। তদন্ত কমিশনের একজন সদস্য যথার্থভাবেই সেসব ঘটনাকে 'মানবিক দুর্যোগ' হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। প্রতিবেদনে চারদলীয় জোটের কিছু নেতাকে সেই সময়ের (ওই নেতাদের কেউ কেউ মন্ত্রীর চেয়ারেও অধিষ্ঠিত ছিলেন!) সহিংস ঘটনার জন্য দায়ী করে তাঁদের নাম-পরিচয় তুলে ধরা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন তদন্ত প্রতিবেদনটি হাতে পেয়ে বলেছেন, দোষীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে। এ দেশে 'হবে', 'হচ্ছে', 'করব', 'করছি' ইত্যাদি শব্দের জটাজালের এক অদ্ভুত সংস্কৃতি চালু আছে। প্রতিকার কবে কিংবা কতটা কী হবে তা ভবিষ্যৎ জানে, কিন্তু বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন মুখোশধারীদের চিহ্নিত করে জাতির সামনে তাদের পরিচয় তুলে ধরতে পেরেছেন_এটি বিলম্বে হলেও বড় কাজ হয়েছে।
২০০১ সালের অক্টোবর মাসের জাতীয় নির্বাচনের আগে ও পরে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা কিভাবে নির্বিচার অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তা সচেতন মহলের অজানা নয়। বরিশাল, বাগেরহাট, ভোলা, ঝালকাঠি, খুলনা, সাতক্ষীরা, চট্টগ্রাম, মুন্সীগঞ্জ, ফেনী, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা_কোথায় ঘটেনি সহিংসতা? এমন একটি জনপদও বাকি ছিল না, যেখানে ভিন্নমতাবলম্বী সাধারণ মানুষ নির্যাতনের শিকার হননি, যেখানে তাঁদের ঘরবাড়ি, মন্দির, প্রতিমা ভাঙেনি। নির্বাচনের তাণ্ডবতা কেবল রাজনৈতিক প্রতিহিংসার মধ্যে সীমিত থাকলেও একটি খোঁড়া যুক্তি খুঁজে পাওয়া যেত। যাঁরা গরিব, নিজেদের ভিটামাটিও নেই, অন্যের বাড়িতে আশ্রিত, যাঁরা দুই বেলা দু'মুঠো অন্ন জোটাতে পারেন না, তাঁদের আবার রাজনীতি কী? কিন্তু এসব মূঢ়-ম্লান মুখই সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছিলেন। ওই সময় পেশাগত দায়িত্ব পালন এবং পরে একটি মানবাধিকার সংগঠনের পক্ষে কাজ করতে গিয়ে লালমোহন, রামশীলসহ কয়েকটি জনপদে বিপন্ন মানবতার যে চিত্র দেখেছি, তা ভাবলে আজও গায়ে কাঁটা দেয়। তখন একটি প্রশ্নই সারাক্ষণ তাড়া করছিল, এই আমাদের দেশ! গফরগাঁওয়ের জ্যোৎস্না রানী, মনি বাইন, আগৈলঝাড়ার সাবিত্রী, মধু, শেফালী সরকার, ভোলার শেফালী রানী, রীতা রানী, চিলতামারীর হাসিনা, মধুরানী দাশ, চম্পা, জয়পুরহাটের সুজাতা, রেনুকা অধিকারী, রাউজানের প্রভা দাশ, মিরসরাইয়ের সম্বি, কুটন দাশ, চন্দনাইশের বনিতাসহ অগণিত নারী ওই দুঃসময়ের দুঃসহ স্মারক। আর বেশির ভাগ পুরুষই হয় নির্যাতিত, না হয় ঘরবাড়ি থেকে বিতাড়িত হয়েছিলেন এবং অভিযোগ আছে, যাঁদের অনেকেই শেষ পর্যন্ত দেশত্যাগ করতেও বাধ্য হন। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে ক্ষমতাকে কেন্দ্র করে দুর্বৃত্তরা কিভাবে লালিত হয়, এসব তারই জ্বলন্ত প্রমাণ। সাম্প্রদায়িকতাকে নিন্দা করলে, এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে তা মানবতার পক্ষেই যায়_এ ধারণাটাও তখন ভেঙে গিয়েছিল।
বাংলাদেশে একসময় ভয়ানক কিছু রোগের আধিপত্য ছিল। যেমন_বসন্ত, পোলিও অথবা যক্ষ্মা। এর কিছু নির্মূল হয়েছে, কিছু নির্মূলের পথে। এসব ভয়ংকর রোগের তালিকায় আছে আরেকটি অনিরাময়যোগ্য রোগ, যার নাম সাম্প্রদায়িকতা। কোনো সরকার যদি এ রোগ নির্মূলের সহায়ক শক্তি না হয়ে জীবাণু ছড়ানোর বাহন হয়, তবে এর পরিণাম কতটা ভয়ংকর হতে পারে, এর দৃষ্টান্ত হতে পারে ২০০১ সালের নির্বাচনোত্তর বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, ক্ষমতার অপব্যবহার, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও জঙ্গিবাদের কারণে বাংলাদেশের ভাবমর্যাদা অতীতে বহুবার হয়েছে কলিমালিপ্ত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যদি একজনকে রেসিস্ট হিসেবে (বর্ণবিদ্বেষী) অভিযুক্ত করা হয়, তাহলে সে লজ্জায় অধোবদন হয়। অনস্বীকার্য যে এ দেশের বেশির ভাগ মানুষ অসাম্প্রদায়িক এবং এর সবচেয়ে বড় প্রমাণও একাত্তরেই আমরা পেয়েছি; কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশ কিছু স্বার্থান্বেষী ব্যক্তির হিংসা-বিদ্বেষের শানিত ছুরিতে ক্ষত-বিক্ষত, রক্তাক্ত হয়েছে কয়েকবার। আমরা সেই বাংলাদেশে ফিরে যেতে চাই, যে বাংলাদেশে শুভ বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের জন্য যা কিছু অকল্যাণকর, তা কবর দিয়ে অভ্যুদয় ঘটেছিল বাঙালির জাতিরাষ্ট্রের। একজন নাগরিকের পরিচয় তার রাষ্ট্রসত্তায়, কোন ধর্মে সে জন্মগ্রহণ করেছে তাতে নয়। এ বিষয়টির মীমাংসা হয়ে গেছে একাত্তরেই। কিন্তু ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনের পর বাংলাদেশ আবার পড়ে মধ্যযুগের পচা দুর্গন্ধময় অন্ধগলিতে। হিন্দু, বৌদ্ধ, এমনকি আহমদিয়া সম্প্রদায়ের লোকজনও নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার হন নির্বিচারে। ২০০১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে-পরে গণমাধ্যম, বিশেষ করে পত্রপত্রিকায় নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষের আর্তনাদের প্রতিধ্বনি মূর্ত হয়ে উঠেছিল বলেই অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যায়নি তাঁদের। তা না হলে তথাকথিত বিজয়ের পর বিজয়োল্লাসীদের উন্মত্ততা এ জনপদের আরো অনেককেই হয়তো নিশ্চিহ্ন করে দিত।
২০০১ সালের নির্বাচনোত্তর নির্যাতন দূর-অতীত ও সাম্প্রতিককালের সব মাত্রা অতিক্রম করে যায় পরিমাপে-বিস্তৃতিতে। ঘটনাগুলো স্থানিক বা বিচ্ছিন্ন ছিল না। প্রায় গোটা দেশই মানুষ নামধারী নরপশুদের অবাধ বিচরণ ক্ষেত্র কিংবা চারণভূমি হয়ে উঠেছিল। তিল তিল করে দীর্ঘ সময়ের পথ ধরে যে মানবিক মূল্যবোধ, অসাম্প্রদায়িক সমসমাজ গড়ার অনলস চেষ্টা, ধর্ম-সম্প্রদায়-জনগোষ্ঠী অনপেক্ষ রাষ্ট্রব্যবস্থা নির্মাণ, জাতি ধর্ম বর্ণ গোষ্ঠী নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সমান অধিকার প্রতিষ্ঠার সব অর্জন, আমাদের সব সাফল্য, পরম যত্নে লালিত স্বপ্নগুলো একেবারেই বিলীন করার পথ যারা প্রশস্ত করেছিল, তাদের বিরুদ্ধে কোনোই প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি! ২০০১ সালের নির্বাচনের আগে-পরে তখনকার সরকার ও প্রশাসনের দায়িত্বশীলরা যেসব বিষয়কে 'মিডিয়ার অতিরঞ্জন', কিছুসংখ্যক মানুষের 'গণ্ডগোল'_এসব বলে উড়িয়ে দিতে চেয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কেন এত দিন সরকার পদক্ষেপ নিল না_এ প্রশ্নও উঠবেই।
রাষ্ট্রশক্তি যদি তার চরিত্র ঠিক রাখে, তবে উদ্ধত ক্ষমতামদমত্ত, বলবান কিংবা জ্ঞানহীন কুচক্রী মানুষ নামের অপশক্তি কি বেশি দূর যেতে পারে? রাষ্ট্র কাঠামোর কিংবা দেশ চালানোর শাখা-উপশাখায় যাঁরা সম্পৃক্ত, তাঁরা যদি নিষ্ঠ থাকেন, দায়বদ্ধ থাকেন, জবাবদিহিতার পাট না চুকিয়ে ফেলেন, তাহলে মানুষের সব অধিকার রক্ষা পাবে, মানুষ বাঁচবে, শঙ্কামুক্ত থাকবে এবং সে রকম উদ্বেগজনক পরিস্থিতির আর সৃষ্টি হবে না। এ দেশে মানবতার বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের যে পর্যন্ত না সুষ্ঠু বিচার হবে, সে পর্যন্ত কখনো লর্ড হার্ডিঞ্জ, কখনো রামশীল, কখনো আগৈলঝাড়া কিংবা অন্য কোনো জনপদ আতঙ্কজনক বার্তা নিয়ে সংবাদ শিরোনাম হবেই। একটা কথা তো সত্য, প্রবলের স্বার্থ থেকে উৎপত্তি ব্যাধি ক্যান্সার বিষের মতো সমাজে ছড়িয়ে পড়েছে। এ দেশের সিংহভাগ সাধারণ মানুষ যে অদৃশ্য শিকলে বাঁধা, তা তাদেরই ছিঁড়তে হবে। তবে রাষ্ট্রশক্তি তার দায় এড়াতে পারে না। কেউই আইনের ঊর্ধে নন। অন্যায়কে অবশ্যই অন্যায়ের দৃষ্টিতে দেখতে হবে। অন্যায়কারীর দলীয় বা রাজনৈতিক পরিচয় যাই হোক না কেন, সমাজ ও আইনের দৃষ্টিতে সে বা তারা শুধুই অন্যায়কারী এবং তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো রাষ্ট্রের অবশ্যই দায় রয়েছে। বিলম্ব অনেক হয়েছে। আমরা প্রত্যাশা করব, রাষ্ট্রশক্তি আর বিলম্ব না করে ন্যায়বিচার ও আইনের শাসনের পথ প্রশস্ত করে তদন্ত প্রতিবেদন মোতাবেক এসব ঘটনার জন্য অভিযুক্তদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে। আমাদের ভবিষ্যৎ হচ্ছে বাংলাদেশ। সব ধর্মের, সব মানুষের সমান অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকার দেশ, বাংলাদেশ। রাষ্ট্র হোক সবার অর্থাৎ জনগণের, কিন্তু রাষ্ট্র কোনোভাবেই যেন দুর্বৃত্তদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল না হয়।
লেখক : সাংবাদিক
দৈনিক কালের কন্ঠ, ১ মে, ২০১১
No comments:
Post a Comment