মন্দির ভাংচুর ॥ সন্ত্রাসী হামলায় সাংবাদিক আহত, শহরে মিছিল
নিজস্ব সংবাদদাতা, মানিকগঞ্জ, ৫ এপ্রিল ॥মঙ্গলবার সকালে মানিকগঞ্জের উকিয়ারা গ্রামের এক সংখ্যালঘু পরিবারকে ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদসহ ওই বাড়ির মন্দির ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। এ ঘটনার সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন সাংবাদিক বিপ্লব চক্রবর্তী এবং পালিয়ে আত্মরক্ষা করেছেন সাংবাদিক আবুল কালাম আজাদ। সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানিয়ে শহরে মিছিল সমাবেশ' করেছে মানিকগঞ্জের সাংবাদিকরা।
জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল ১০টায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েকশ কর্মী উকিয়ারা গ্রামের আপন দুই ভাই গোসাই মণ্ডল এবং শরৎ মন্ডলকে তাদের ভিটেবাড়ি থেকে উচ্ছেদের জন্য হামলা চালায়। সন্ত্রাসীরা এ সময় ওই বাড়ির ৪টি টিনের ঘরবাড়ির আঙিনার একটি মন্দির ও একটি দোকানঘর ভেঙ্গে নিশ্চিহ্ন করে দেয়। সন্ত্রাসীরা ঘরের আসবাবপত্রে অগ্নিসংযোগও করে। এ সময় পুরো এলাকায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। উকিয়ারা বাজারের সকল দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। আহত সাংবাদিক বিপ্লব চক্রবর্তী জানান, জেলা আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ইসরাফিল হোসেনের নির্দেশে তাঁর ওপর হামলা হয়েছে। সংখ্যালঘুর বাড়ি উচ্ছেদ এবং সাংবাদিকদের ওপর হামলার সময় সদর থানা পুলিশের কাছ থেকে কোন সাহায্য পাওয়া যায়নি, পুলিশ ঘটনা ঘটে যাবার তিন ঘণ্টা পর ঘটনাস্থলে পৌঁছে। সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানিকগঞ্জের সাংবাদিকরা জেলা শহরে তাৎক্ষণিকভাবে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদসভার আয়োজন করে। প্রতিবাদসভা থেকে অবিলম্বে সাংবাদিকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলায় জড়িতদের শাস্তি দাবি এবং এ ঘটনার নেপথ্য মদদদাতা হিসেবে সদর থানার ওসি আবু তাহেরের অপসারণ দাবি করেন।
মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাব, বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদ, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ, জাতীয় হিন্দু মহাজোট এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেছে।
এদিকে ঘটনা প্রসঙ্গে মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক মুনশী শাহাবুদ্দিন আহমেদ বলেন, জমিটি নিয়ে আদালতে মামলা চলছে, নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যনত্ম যে কোন ধরনের উচ্ছেদ সম্পূর্ণ বেআইনী। পুলিশ সুপার মাসুদ করিম সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন।
সূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ, ৬ এপ্রিল, ২০১১
No comments:
Post a Comment