নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার
কক্সবাজার শহরের বাহারছড়া বাজারসংলগ্ন ১৪টি হিন্দু পরিবারকে উচ্ছেদ করে তাদের আড়াই কোটি টাকার ১৪ শতক জমি দখল করার চেষ্টা করছে একটি প্রভাবশালী মহল। এই অপচেষ্টার অংশ হিসেবেই ২২ সেপ্টেম্বর সন্ত্রাসীরা সংখ্যালঘুদের বসতবাড়িতে হামলা চালালে নারী ও শিশুসহ ১০ জন আহত হয়।
হামলার শিকার ওই ১৪টি হিন্দু পরিবারের সদস্যরা গত বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে। এতে ওই প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। এতে বাহারছড়ার বাসিন্দা বাবুল দাশ, শেফালী দাশ, কমলা সেন, সন্ধ্যা দাশসহ ১৩ জন স্বাক্ষর করেছেন।
বাবুল দাশ (৪০) অভিযোগ করে বলেন, ‘কক্সবাজার শহরের বাহারছড়ার পিটিআই সড়কের বাসিন্দা সরওয়ার উদ্দিন ও আরিফুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে আমাদের বসতবাড়ির ১৪ শতক মূল্যবান জমি দখল করার চেষ্টা করছেন।
গত ২২ সেপ্টেম্বর রাত দুইটার সময় ১০-১২ জন মুখোশধারী সন্ত্রাসী আমারসহ আরও ৮-১০টি বসতবাড়িতে হামলা চালায় এবং বসতবাড়ি থেকে আমাদের উচ্ছেদ করার চেষ্টা চালায়। এ সময় সন্ত্রাসীদের হামলায় শেফালী দাশ (৩৮), কমলা সেন (২৮), আরতি দাশ (২৪), সন্ধ্যা দাশ (১৬), বেবী দাশসহ (২৫) ১০ জন নারী ও শিশু আহত হন।’
কক্সবাজার পৌরসভার কাউন্সিলর জসিম উদ্দিন জানান, বাহারছড়া বাজারসংলগ্ন বিএস ৬৩৮ নম্বর খতিয়ানের বিএস ৩০৯৩/৩০৯৪/৩০৯৫ নম্বর দাগে ৫৭ শতক জমি আছে। এর মধ্যে ১৪ শতক জমিতে ১৪টি হিন্দু পরিবার দীর্ঘ কয়েক যুগ ধরে বাস করছে। জমিটির বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় আড়াই কোটি টাকা। আর এই কারণে জমি থেকে অসহায় হিন্দু পরিবারগুলোকে উচ্ছেদের চক্রান্ত চলছে।
বাবুল ও শেফালী দাশ অভিযোগ করেন, প্রভাবশালী সরওয়ার উদ্দিন ২০০৭ সালেও সন্ত্রাসী দিয়ে তাদের জমি দখলের চেষ্টা চালান। এ ঘটনায় তারা সরওয়ার উদ্দিনের বিরুদ্ধে কক্সবাজার যুগ্ম জেলা জজ-১ আদালতে দুটি মামলা করেছিলেন।
সরওয়ার উদ্দিন ও আরিফুল ইসলাম জমি দখলের চেষ্টা ও সন্ত্রাসী দিয়ে হামলা চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁরা দাবি করেন, হিন্দু পরিবারগুলোর দখলে থাকা ১৪ শতক জমির মধ্যে ৪ শতকই তাঁদের। এ নিয়ে তাঁরা আদালতে মামলা করেছেন।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসাইন জানান, বিষয়টি তাঁর জানা নেই। তিনি হিন্দু পরিবারগুলোর সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেবেন।
কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম ওই ১৪টি পরিবারের জমি দখলের চেষ্টা হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি আরও জানান, হিন্দু পরিবারগুলোর সদস্যদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালানোর কোনো ঘটনা ঘটেনি।
প্রথম আলো, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০৯
No comments:
Post a Comment