গোলাপগঞ্জে মনসা মন্দির পোড়ানোর অভিযোগ

সিলেট ব্যুরো

সিলেটের গোলাপগঞ্জে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের একটি মন্দির পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় অজ্ঞাত দুর্বৃত্তদের অভিযুক্ত করে গোলাপগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়রি করা হয়েছে। তবে পুলিশ ধারণা করছে, বৈদ্যুতিক শটসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ঢাকা দক্ষিণ ইউনিয়নের মিশ্রপাড়ায় স্থাপিত মনসা মন্দির গত বুধবার গভীর রাতে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। এ ব্যাপারে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পক্ষে বিনয় সরকার গোলাপগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন। তবে গোলাপগঞ্জ থানার ওসি সালেহ উদ্দিন সমকালকে বলেন, প্রাথমিক তদন্তে বৈদ্যুতিক শটসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে ধারণা করছি।

এদিকে মনসা মন্দির পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় গোলাপগঞ্জ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্যপরিষদের সভাপতি বিজিত কৃষ্ণ গোস্বামী, সাধারণ সম্পাদক ডা. জলধর চক্রবর্তী, পুজা উদযাপন পরিষদের উপজেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মটাই দেব, সাধারণ সম্পাদক রজত চক্রবর্তী, বাংলাদেশ ছাত্রঐক্য পরিষদের উপজেলা শাখার সভাপতি হরিপদ দেব, সাধারণ সম্পাদক কৃপাময় চক্রবর্তী মিটু ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন এবং জড়িতদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন

সমকাল, ২৯ আগস্ট

শ্রী শ্রী রমনা কালী মন্দিরের ইতিকথা

শ্রী শ্রী রমনা কালী মন্দিরের ইতিকথা(সংক্ষিপ্ত)
এ্যাডভোকেট অশোক কুমার ঘোষ

শ্রী শ্রী রমনা কালী (ভদ্রা কালী) মন্দিরের এবং শ্রী শ্রী আনন্দময়ী আশ্রমের অতীত ও বর্তমান সম্পর্কে জানবার ইচ্ছে অনেকেই মনে করেন. রমনা কালী বাড়ীর নাম থেকে রমনা থানার নামটি হয়েছে, আদৌ ঘটনাটি সত্যি নয়। রমান শব্দের অর্থ ইংরেজীতে ল'ন, বাংলায়া ঠিক এর প্রতিশব্দ আছে কিনা জানি না, তবে রমনা শব্দটি ফার্সী শব্দ এবং এ শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন ১৬১০ সালে মোঘল সম্রাটের সেনাপতি ইসলাম খাঁ। মোঘল আমলেই বর্তমান রমনায় বিস্তৃত এলাকা নিয়ে তৈলি করা হয় বাগান যা ঢাকার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছিল। এবং রমনা এলাকায় চিশতিয়ার নামকরণ দিয়ে আবাসিক এলাকা হিসিবে প্রতিষ্ঠিত করা হয়, যেখানে বসবাস করতেন ইসলাম খাঁ চিশতির বংশধরের লোকজন। পরবর্তীতে চিশতিয়ার নাম পরিবর্তন পূর্বক নামকরণ করা হয় 'পুরান নাখাস' যার অর্থ পুরনো দাস বাজার। খুব সম্ভবত মোগল আমলে এখানে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আনা ক্রীতদাস-দাসী বিক্রি করা হত। মোগল আমলের পুরো সময়টা বর্তমান রমনা এলাকা বাগ-ই বাদশাহী বাগান হিসেবে পরিচিত ছিল এবং তখন থেকে ঢাকার নবাব আমল পর্যন্ত রমনা বাগানে সাধারণ জনসাধারণের প্রবেশ অধিকার ছিল না। মহল্লা সুজাতপুর ও মহল্লা চিশতিয়ার তৎকালে ঢাকার নাম করা জ্ঞানী-গুণী,শিল্পী, সাহিত্যিক, আইনজীবী, ডাক্তার প্রমুখ বসবাস করতেন। কলা ভবন, কার্জন হল, শাহবাগ, সিদ্ধেশ্বরী কালী বাড়ী, রমনা থানা সকলই ছিল ১৮৩২ সাল ওয়াল্টারের তথ্য অনুসারে বাগ-ই-বাদশাহী রমনা বাগানের মধ্যবর্তী এলাকা। ঐ সময় রমনা এলাকায় ইটের তৈরী বাড়ী-ঘর ছিল ৩৫টি মাত্র, বাকীগুলো ছিল খড়ের ঘর। মোগল সম্রাট জাহাঙ্গীর ইসলাম খাঁর সাথে বাগ-ই-বাদশাহী দর্শনে এসেছিলেন এবং পরবর্তীতে ইসলাম খাঁ ঢাকার ভাওয়াল বনে শিকার করতে যেয়ে মারা গেলে তাকে বাগ-ই-বাদশাহীতে কবর দেয়া হয়। বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পূর্বের রমনা পার্ক তখনকার বাদশাহী বাগরে মাঠ ছিল সবুজ ঘাসে ঢাকা চত্বর। কালক্রমে সুজাতপুর, চিশতিয়া, বাগ-ই-বাদশাহী এলাকার নামকরণ বিলুপ্ত হয়ে যায় এবং জনসাধারণের নিকট পরিচিতি পায় উক্ত এলাকাটি রমনা হিসেবে। রমনার দক্ষিণ, পূর্ব ও পশ্চিম এলাকা ছিল ১৯৩২ সালের দিকেও ঘন জঙ্গল এবং জনবসতি ছিল না মোটেও।

মোগল সুবেদার মুহাম্মদ আজমের আমলে রমনার দক্ষিণে ১৬৭৯ সালে নির্মিত হয় হাজী শাহবাজের মসজিদ যা এখনও বর্তমান আছে। হাজী শাহবাজ তৎকালে একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি ছিলেন এবং বর্তমানে তাঁর মৃতদেহ শায়িত আছে শাহবাজ মাজারে। বর্তমানে উক্ত মসজিদ ও মাজারের খাদেম মোহাম্মদ আবদুল আলী ফকির, পিতা-মৃত মোহাম্মদ আবদুল হাকিম ফকির। মোঘল আমলের শেষ দিকে রমনার উন্নতি বিলুপ্তি পেতে থাকে। মোঘল সম্রাট জাহাঙ্গীর ইসলাম খাঁর মৃতদেহ চিশতি বেহেশতী থেকে উত্তোলন করে ফতেপুর সিক্রিতে সমাহিত করেন যা ইতিহাসবিদ সকলেই জানে।

মোঘল আমলের শেষ দিকে মোঘল সেনাপতি মান সিংহের সহযোগিতা ও বার ভূঁইয়ার অন্যতম কেদার রায় এর অর্থে শাহবাজ মসজিদের উত্তর দিকে হরিচরণ গিরি ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন কৃপা সিদ্ধির আখড়া যা পরবর্তীতে ভদ্রাকালী বাড়ী এবং পর্যায়ক্রমে নামকরণ করা হয় রমনা কালী মন্দির হিসেবে। হরিচরণ গিরি ও কেদার রায় এবং গুরু ছিলেন গোপাল গিরি, গোপাল গিরি স্মরণেই রমনা (ভদ্রা) কালী মন্দির স্থাপন করা হয় মোঘল সম্রাটের পৃষ্টপোষকতায়। ঐতিহাসিক দানীর মতে, রমনা কালী মন্দির এলাকায় মোট ৩টি পুকুর ছিল্ৎ একটি বর্তমান শিশু পার্কের মধ্যে, একটি শ্রী মা আনন্দময়ী আশ্রমের নিকটে এবং তৃতীয়টি বর্তমানে বিদ্যমান আছে যা জনসাধারণ জানে রমনা কালী বাড়ির পুকুর হিসেবে। তখন থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের নিকট রমান কালী বাড়ী বা ভদ্রা দেবীর বাড়ী একটি তীর্থ ক্ষেত্র হিসেবে পরিচিতি পায় এবং বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, শ্রী লংকা, বার্মা থেকে অসংখ্য ভক্ত ভদ্রা দেবীর মন্দিরে আসতেন প্রার্থনা করতে। তৎকালে রমনা এলাকা শুধু হিন্দু বা মুসলিম সম্প্রদায়ের উপাসনালয় ছিল না। গ্রীকদের উপসনালয় ও গ্রীক কবর স্থান রমনা এলাকায় ছিল এবং যা বর্তমানে আছে। পাঠকবৃন্দ তিন নেতার মাজার থেকে বাংলা একাডেমীর পাশ দিয়ে কলা ভবনে যেতে দেখবেন ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্ররে গ্রীক স্মৃতি সৌধটি, এখনও যা মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে, যা আপনার দৃষ্টি আকর্ষন করবে।

মোঘল সাম্রাজ্যের পতনের পর রমনা এলাকা হয়ে উঠে নিভৃত জঙ্গল ও বিরাণ অঞ্চল, শুধুমাত্র মসজিদে ও মন্দিরে লোকজনের আনাগোনা ছিল। ইংরেজ আমলে ম্যাজিষ্ট্রেট চার্লস ডস ১৮৫২ সালে রমনা এলাকার জঙ্গল কেটে পরিস্কার করেন এবং রমনাকে রেসকোর্স ময়দান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। ম্যাজিস্ট্রেস চালর্স ডস ঢাকা ত্যাগ করার পর আবার রমনা এলাকার উন্নয়নে ভাটা পড়ে এবং অবহেলিত অঞ্চল হিসেবে দেখা যায়।

তথ্য কৃতজ্ঞতা: হিন্দুপেজ

ধ্বংসপ্রাপ্ত রমনা কালী মন্দির

১৯৭১ সালে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর দ্বারা ধ্বংসপ্রাপ্ত রমনা কালী মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ।

ভোলায় স্কুলছাত্রীকে অপহরণে ব্যর্থ হয়ে সংখ্যালঘুর বাড়িতে হামলা ভাংচুর

দৈনিক জনকণ্ঠ, ১৮ আগস্ট, ২০০৮

নিজস্ব সংবাদদাতা, ভোলা, ১৭ আগস্ট।। ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় শনিবার স্কুলছাত্রীকে অপহরণ করতে গিয়ে ক্যাডাররা ব্যর্থ হয়ে এক সংখ্যালঘুর বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। ক্যাডাররা তাণ্ডব চালিয়ে ঘরবাড়ি ভাংচুর করেছে। এ সময় তাদের হামলায় ৮ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ ক্যাডারদের ব্যবহৃত মাইক্রোবাসসহ একজনকে গ্রেফতার করেছে। এ ব্যাপারে চরফ্যাশন থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। ইতোপূর্বেও ক্যাডাররা ওই স্কুলছাত্রীকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।

স্থানীয় সূত্র ও মামলার বাদী স্বপন কুমার দেবনাথ জানান, চরফ্যাশন পৌরসভার শরীফপাড়া এলাকার পার্থ সারথীর বাড়িতে শনিবার ভোররাতে ক্যাডাররা স্বপন কুমারের স্কুলপড়ুয়া কন্যা গীতাকে অপহরণ করার জন্য হামলা চালায়। অপহরণ করতে ব্যর্থ হয়ে ওই বাড়িতে ভাংচুর করে ঘরের লোকজনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। এ সময় রিনা রাণী, শ্রী কৃষ্ণ, দীপক, শ্রী কৃষ্ণ দেবনাথের স্ত্রীসহ ৮ জন আহত হয়। হামলা চলাকালে বাড়ির লোকজনের চিৎকারে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। কিন্তু তাদের ব্যবহৃত মাইক্রোবাস ফেলে যাওয়ায় গাড়িসহ চালককে পুলিশ আটক করে। জানা যায়, ২০০৭ সালের ১ ডিসেম্বর সন্ত্রাসী জাকির ও তার বাহিনী স্বন কুমারের স্কুল পড়ুয়া কন্যা গীতা রানীকে স্কুলে যাওয়ার পথে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। পুলিশ পরে গীতা রানীকে উদ্ধার করে। ওই ঘটনায় বিশেষ ট্রাইব্যুনাল আদালতে একটি অপহরণ মামলা এখনও চলছে। এ মামলায় আসামীদের সাজা নিশ্চিত হবে বুঝতে পেরে মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকি দিয়ে আসছিল তারা। মামলা প্রত্যাহার না করায় জাকির বাহিনী আবার দ্বিতীয় দফা হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। বর্তমানে সংখ্যালঘু পরিবারটি চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে। তবে এ ব্যাপারে জাকিরের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

প্রাতিষ্ঠানিক সাম্প্রদায়িকতা- প্রেক্ষিত বাংলাদেশ

লিখেছেন অপবাক

মানুষ ধর্মীয় চেতনা ধারণ করলে তাতে তেমন ক্ষতি হয় না, মানুষের ধর্মীয় চেতনা পরিচিত জনের পীড়ার কারণ হলেও তেমনভাবে তা বিশাল একটা ভোক্তা শ্রেণীকে আক্রান্ত করে না। তবে যখন প্রতিষ্ঠান ধর্মীয় চেতনা ধারণ করে কিংবা প্রতিষ্ঠান নিজেই সাম্প্রদায়িক এবং ধর্মীয় চরিত্র এবং চিহ্ন ধারণ করে তখন সেটা সামগ্রীক ভাবে সকল ভোক্তা এবং কর্মীর ভোগান্তির কারণ হয়ে উঠে।

ধর্মীয় পরিচয় নির্ধারণ করে এমন স্মারক পরিধান করা কিংবা না করাটা ব্যক্তি মানুষের নিজস্ব স্বাধীনতা, তার বিশ্বাসের স্বাধীনতার মতোই এটার অধিকার যথাযথ পালিত হওয়াটাই বাঞ্ছনীয়, তবে গতকাল প্রদত্ত আদেশ বলে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের সকল মহিলা কর্মীকে এখন থেকে স্কার্ফ বেধে আসতে হবে। এই ধর্মীয় চিহ্ন ধারণ করাটা তাদের চাকুরির কোনো শর্তে না থাকলেও যেহেতু নিয়োগ বিধিমালায় বলা আছে প্রয়োজনে কতৃপক্ষ নতুন কোনো আইন কিংবা বিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে, সেই বিশেষ ক্ষমতা বলে এখন সকল মহিলা কর্মীকে মাথায় স্কার্ফ বেধে চাকুরিতে আসতে হবে।
মাথায় স্কার্ফ বাধা উচিত কিংবা অনুচিত এই বিতর্ক না করে শুধুমাত্র ধর্মীয় ব্যাংকিং চেতনা ধারণ করে সকল মহিলা কর্মীর জন্য স্কার্ফ বাধ্যতা করার বিধিটা আদৌ সঙ্গত কি না এই প্রশ্নটাই আমার ভেতরে ডালপালা মেললো।

আমার অন্য সকল প্রশ্নের ভেতরে এই প্রশ্নটাই প্রথমে ছিলো, এটা ঠিক কি উপলক্ষে জারি করা হলো? শোভনতা সৌজন্যতা এবং শরিয়া মোতাবেক ব্যাংকিং চালানোর জন্য। আমি আশ্চর্য হলাম। বন্ধুকে বললাম তোমাদের এখানে অন্য ধর্মের কোনো কর্মচারী নেই?
তার উত্তর ছিলো বর্তমানে মনে হয় নেই- তাই এই বিধান যে কারো ধর্মীয় স্বাধীনতাকে ক্ষুন্ন করবে না এমন না, তবে সেটা বিধর্মীর উপরে ধর্মীয় চিহ্নের আগ্রাসন হয়ে উঠবে না।

আমাদের বাংলাদেশের পূঁজিবাজারে শাহজালাল ব্যাংকের শেয়ারের দাম ভালো। বলা চলে চড়া, তবে বাংলাদেশের ক্ষুদ্র পূঁজির চলন, যা শেয়ার বাজারে কোনো প্রতিষ্ঠানের উপরে আস্থা এবং অনাস্থার প্রকাশ ঘটায়, যেখানে সচেতনতার স্পষ্ট অভাব।অন্তত অন্য কোনো দেশে এমন ধর্মীয় বিভাজনমূলক যেকোনো সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়া পড়তো শাহজালাল ব্যাংকের শেয়ারের মূল্যে।
যেকোনো ধর্মীয় আগ্রাসনকে শেয়ারহোল্ডাররা বিনিয়োগের পক্ষে ক্ষতিকারক ভেবে থাকেন, তাই তারা খুব দ্রুতই এই শেয়ার ছেড়ে দেওয়ার চেষ্টা করতেন এবং এই অনাস্থার প্রভাব পড়তো শেয়ারের দামে।
এই সাম্ভাব্য অনাস্থার ভয়েই প্রতিষ্ঠানগুলো যে দেশে- যে ধর্মের প্রতিনিধিত্ব করুক না কেনো একটা আপাত অসাম্প্রদায়িক, ধর্ম নিরপেক্ষ চরিত্র বজায় রাখে।
শাহজালাল ব্যাংক এই সিদ্ধান্ত গ্রহন করলো, এর পরবর্তীতে সেখানে অন্য কোনো ধর্মের কর্মচারির নিয়োগ পাওয়া দুরহ। অন্তত এমন স্পষ্ট ধর্মীয় চেতনা যে প্রতিষ্ঠানে রয়েছে সেখানে অন্য ধর্মের কোনো কর্মী কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবে না।

প্রতিষ্ঠান যখন এভাবে ধর্মীয় চিহ্ন ধারণ করতে চায় এবং সেটাকে প্রতিষ্ঠানের বিধিতে স্পষ্ট করে প্রকাশ করে সেই প্রতিষ্ঠান অসাংবিধানিক আচরণ করে। বাংলাদেশের সংবিধানে কোথাও এই ধর্মীয় বিভাজনের সুযোগ নেই, যোগ্যতার বিচারে বিশেষ কোনো ধর্মের প্রাধান্যও নাকচ করা হয়েছে।
তবে বর্তমানের বাংলাদেশের ঘাড়ে চেপে বসে আছে পাকিস্তানের ভুত, তাই এই একটা প্রতিষ্ঠান শুধু নয়, বরং ধর্মীয় চেতনা ধারণকারী অন্য সকল ইসলামী প্রতিষ্ঠানের অনেকখানেই অন্য ধর্মাবলম্বীদের হেনেস্থার শিকার হতে হচ্ছে।
আল মানারাত নামের একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আমার এক পরিচিত শিক্ষকতার জন্য আবেদন করতে গিয়েছিলো, সেখানে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে কোথাও বলা ছিলো না বিশেষ একটা ধর্মকে প্রধান্য দেওয়া হবে। আমার এক পরিচিত রঞ্জন বণিক সেখানে গিয়েছিলো-
তার শিক্ষাগত সনদ দেখে, তার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যয়ন পত্র দেখে ইন্টারভিউ বোর্ডের প্রথম প্রশ্ন ছিলো আপনি কি কালেমা তাইয়্যেবা জানেন?
যার নাম রঞ্জন বণিক, যে তার সিভিতে স্পষ্ট উল্লেখ করেছে তার ধর্ম হিন্দু- তাকে এই প্রশ্নটা করাটা উচিত হয়েছে কি না এটাও একটা বিবেচনার বিষয়।
সে বের হয়ে আসবার সময় একটাই কথা বলেছিলো ইন্টারভিউ বোর্ডকে। আমার মনে হয় না পদার্শ বিজ্ঞান পড়ানোর সাথে কালেমা তাইয়্যেবা জানবার কোনো সম্পর্ক আছে।

আমি ভেবেছিলাম এটা বিচ্ছিন্ন একটা ঘটনা। তবে ভুল ভাঙলো, তার দুই বছর পরে ফয়সাল কিংবা ফাহাদ, কোনো এক ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখে সেখানে চাকুরির আবেদন করলো বিকাশ কুমার দাস-
ইন্টারভিউ বোর্ডে তাকে প্রথম যে প্রশ্নটা করা হলো আপনি সুরা ফাতিহা তেলাওয়াৎ করেন।
প্রশ্নটা অনেক দিন ধরেই করছি- বাংলাদেশ আদৌ কোনো ভাবে ধর্মান্ধ একটা রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে না কি এটা বাংলাদেশের সমাজ মানসেই ছিলো। এই বিধর্মী বিদ্বেষ যা প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে সেটাকে তীব্র ঘৃনা এবং এই প্রথার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাই।

-----------
লিংক: সামহোয়ারইন ব্লগ

সংখ্যালঘু মহিলা কর্মচারী নিয়োগ করায় ঠাকুরগাঁয়ে দোকান ভাঙচুর-লুটপাট

দোকান মালিককে নির্যাতন
সংখ্যালঘু মহিলা কর্মচারী নিয়োগ করায় ঠাকুরগাঁয়ে দোকান ভাঙচুর-লুটপাট

ইউএনবি(ঠাকুরগাঁও): ঠাকুরগাঁয়ের পল্লীতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ভুক্ত এক স্বামী পরিত্যক্তা মহিলাকে কর্মচারী হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার কারণে কতিপয় সন্ত্রাসী দোকান ভাঙচুর ও ক্যাশ লুট করে দোকানের মালিককে বেদম প্রহার করে এবং দোকানের মালিককে শাস্তি হিসেবে দীর্ঘ আট ঘন্টা ধরে গাছের সাথে বেঁধে রাখে। গত রোববার সকালে ওই ঘটনাটি ঘটে।

এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীর সূত্রে জানা গেছে, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ১৫ নং দেবীপুর ইউনিয়ন কালেশ্বর গ্রামের দলিয়ার রহমান (৩৮) খুররম খাঁ আদর্শ গুচ্ছ গ্রামে রাস্তার ধারে ছোট্ট একটি দোকান দিয়ে সেখানে স্বামী পরিত্যক্তা ও দুই সন্তানের জননী কল্পনা রানীকে (৩৫) দৈনিক ২৫/৩০ টাকা হাজিরার ভিত্তিতে চাকরি দেয়। এই বিষয়টিকে মেনে নিতে পারছিলো না গ্রামের কতিপয় মৌলবাদী ও বখাটে যুবক। তারা প্রায়শই বিভিন্নভাবে ওই মহিলাকে উত্যক্ত করত। সেই সঙ্গে সংখ্যালঘু ওই মহিলাকে চাকরি থেকে বাদ দেয়ার জন্য দলিয়ারকে নানাভাবে হুমকি দেয়। অন্যথায় এর পরিণতি ভয়াবহ হবে বলে শাসায়।

ঘটনার দিন সকাল আনুমানিক সাড়ে ৭টার দিকে ওই এলাকার পবার উদ্দিন, মকবুল রহমান ও মোশারুলসহ কতিপয় ব্যক্তি দলিয়ারের দোকানে গিয়ে টেনে-হিঁচড়ে তাকে বের করে বেদম প্রহার করে। এ সময় তারা দোকান ভাংচুর করে নগদ অর্থসহ প্রায় ১০ হাজার টাকার মালামাল লুট করে। এর পর তারা ওই মহিলাকে কর্মচারী হিসেবে নিয়োগ দেয়ার 'অপরাধে দলিয়ারের দোকানের ক্যশবাক্স লুট করে এবং তাকে বেদম মারপিট করে একটি গাছের সাথে বেঁধে রাখে।

দৈনিক যুগের আলো, ৫ জ্যৈষ্ঠ্য, ১৪১০

নাটোরে রফিক বাহিনীর অত্যাচারে সংখ্যালঘু পরিবার অতিষ্ঠ

নাটোরে রফিক বাহিনীর অত্যাচারে সংখ্যালঘু পরিবার অতিষ্ঠ
নিজস্ব সংবাদদাতা, নাটোর, ৭ আগস্ট।।
নাটোরের সিংড়া থানার বড় চৌগ্রামে রফিক বাহিনীপ্রধান রফিকের অত্যাচার-নির্যাতন ও হুমকিতে একটি সংখ্যালঘু পরিবার আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। জরুরী অবস্থার মধ্যেও রফিকের চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসে অতিষ্ঠ হয়ে স্থানীয়রা বৃহস্পতিবার পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে। এর আগে কয়েক দফায় মামলা রুজু করতে গেলে সিংড়া থানা থেকে তাদের ফিরিয়ে দেয়া হয়। স্থানীয়দের অভিযোগে জানা গেছে, রফিক বাহিনীপ্রধান রফিকুল ইসলাম নিষিদ্ধ চরমপন্থী দলের সদস্য। সে আন্ত:জেলা ডাকাত দলেরও সদস্য। চৌগ্রামের উজ্জ্বল দেবনাথের কাছে সম্প্রতি সে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে ব্যবসাবাণিজ্য বন্ধ এমনকি গ্রামছাড়া করার হুমকিও দেয়া হয়েছে। এর আগে নিজের বসতবাড়ি চত্বরে গোয়াল তুলতে তাকে ১০ হাজার টাকা গুণতে হয়েছে। এক লাখ টাকা চাঁদার দাবি পূরণ না করায় গত ৫ আগস্ট সশস্ত্র সঙ্গীদের নিয়ে রফিক উজ্জ্বল দেবনাথের বাড়িতে চড়াও হয়। উজ্জ্বল ও তার বড় ভাই নিত্যানন্দসহ পরিবারের সদস্যদের মারপিট ও গুরুতর জখমের পর ১০ দিনের আলটিমেটামে এক লাখ টাকা চাঁদা পরিশোদের হুমকি দিয়ে এসেছে রফিক। নইলে উজ্জ্বলের পরিবারকে গ্রামছাড়া করা হবে। আহত নিত্যানন্দকে গুরুতর অবস্থায় রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। উল্লেখ্য হত্যাসহ রফিকের বিরুদ্ধে সিংড়া থানায় অন্তত এক ডজর মামলা রয়েছে। তারপরও সে রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।

রূপগঞ্জে সংখ্যালঘু পরিবারের ওপর সন্ত্রাসী হামলা

রূপগঞ্জে সংখ্যালঘু পরিবারের ওপর সন্ত্রাসী হামলা ।। বাড়িঘর ভাংচুর, লুটপাট

নিজস্ব সংবাদদাতা, রূপগঞ্জ, ৬ আগস্ট।।

রূপগঞ্জে সন্ত্রাসীদের কথামতো জমি ও বাড়ি বিক্রি করে ভারত চলে না যাওয়ায় এক সংখ্যালঘু পরিবারের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়েছে। এ সময় সন্ত্রাসীরা ২ লাখ টাকার মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়। ভাংচুর করে বাড়ির আসবাবপত্র। আহত হয় সংখ্যালঘু ঐ পরিবারের অশীতিপর বৃদ্ধাসহ ৭ ব্যক্তি। উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাঘবেড় গ্রামে বুধবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে।

জানা গেছে, রূপগঞ্জ সদর উপজেলার স্বদেব রায়ের পরিবারকে একই এলাকার সন্ত্রাসী জহিরুল, মোস্তফা ও তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে বাড়ি ও জমিজমা বিক্রি করে ভারত চলে যাওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে আসছিল। স্বদেব তাদের কাছে জমি বিক্রি করে ভারত চলে যেতে না চাওয়ায় বুধবার সকালে লাঠিসোঠা ও দেশী অস্ত্র নিয়ে জহিরুল, মোস্তফা, সিরাজুল, সামসুজ্জামান, ওয়াসীম ও তাদের ১২/১৩ জনের এক সন্ত্রাসী বাহিনী স্বদেব রায়ের বাড়িতে হামলা চালায়। খবর পেয়ে র‌্যাব-১১ এর একটি দল ঘটনাস্থলে গেলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। সন্ত্রাসীদের হামলায় ঐ পরিবারের ৭ সদস্য আহত হয়। আহতাদের মধ্যে জুগল দাসী (৮০), সুবীর রায় (৪৫), স্বদেব (৪৩) ও বাবুকে (১৫) গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় সাহাবাশপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ থানায় মামলা হয়েছে।

দৈনিক জনকণ্ঠ, ৭ আগস্ট, ২০০৮