গুমের ৬ দিন পর সন্তোষের মাটিচাপা লাশ উদ্ধার

ঘাতক বাবুল গ্রেফতার
নিজস্ব সংবাদদাতা, লক্ষ্মীপুর, ২৩ মার্চ ॥ লক্ষ্মীপুরে সন্তোষ চন্দ্র বর্মনকে (৩১) হত্যা করার ৬ দিন পর শনিবার সন্ধ্যায় তার মাটিচাপা লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিজের স্ত্রীকে উত্ত্যক্ত করার জেরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এই যুবককে হত্যা করে লাশ মাটিচাপা দেয় দুর্বৃত্তরা। লাশ গুম করার ছয়দিন পর শনিবার সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানা পুলিশ লাশটি উদ্ধার করেছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে ওসি লিটন দেওয়ানের উপস্থিতিতে সদর উপজেলার পশ্চিম লক্ষ্মীপুর স্থানীয় আলী আজম মাস্টার খামার বাড়ীর একটি গর্ত খুড়ে লাশটি উদ্ধার করা হয়। তার কাছে পাওয়া আইডি কার্ডে বাড়ি-গাইবান্ধা জেলার বাজারপাড়ার বেকাটরি গ্রামের কথা উল্লেখ রয়েছে। সন্তোষ চন্দ্র বর্মন ও তার স্ত্রী সদর উপজেলার পশ্চিম লক্ষ্মীপুর স্থানীয় দালাল বাজার ইউপি’ রাধা গোবিন্দের আখড়ার সভাপতি রাধে শ্যাম বাবুর বাসায় কেয়ারটেকার হিসেবে কাজ করত।
নিহতের স্ত্রী ও চার বছর বয়সী কন্যা সন্তানের জননী পলি রানী পঞ্চমী জানান, গত ১৮ মার্চ সোমবার এশার নামাজের আজানের পর একই এলাকার বাবুল (৪০) তার স্বামী সন্তোষকে ডেকে নিয়ে যায়। এর পর আর সে বাসায় ফেরেনি। এর আগে বাবুল নিহতের স্ত্রী পলিকে বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করত এবং একা ধিকবার তাকে কু-প্রস্তাবও দেয়। সন্তোষ চন্দ্র এ নিয়ে ঘটনার দিন আসামি বাবুলকে বকাঝকা করে। নিখোজ হওয়ার পর বাবুলের কাছে সন্তোষের খবর জানতে চাইলে বাবুল তাকে জানিয়ে দেয় যে সন্তোষ আর ফিরে আসবে না। এর পরও প্রায় প্রতিনিয়ত পলিকে উত্ত্যক্ত করে যাচ্ছিল বাবুল। ঘটনা আঁচ করতে পেরে ২১মার্চ পলি রানী পঞ্চমী বাদী হয়ে বাবুলসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৩/৪ জনকে আসামি করে সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করে। ওইদিন রাতেই পুলিশ বাবুলকে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী শনিবার সন্ধ্যায় গর্ত খুড়ে লাশ উদ্ধার করে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য রাতে লাশটি সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই মোঃ শাহজাহান, ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সন্তোষ বর্মনকে এলোপাতাড়ি ধারালো অস্ত্রের আঘাতের পর গলায় ফাঁস লাগিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। পুলিশের সুরতহাল অনুযায়ী নিহতের মাথার পেছনে বামদিকে, বাম ও ডান হাতের বিভিন্ন অংশে ধারালো অস্ত্রের কাটা গভীর গর্ত রয়েছে। হত্যার পর ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার জন্য লাশ গুম করা হয়েছিল। আর সেখানে খুনীদের আস্তানা ছিল। ৬দিন অতিবাহিত হওয়ায় লাশে পচন ধরেছে। জীবন সঙ্গীকে হারিয়ে স্ত্রী পলির আর্তনাদে এলাকার পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে। স্বামীর হত্যার বদলে তিনি খুনীদের ফাঁসির দাবি করেছেন।
জনকণ্ঠ

No comments:

Post a Comment