কুষ্টিয়া প্রতিনিধি :
দুর্গা ও কালী মন্দিরে প্রবেশ করে উভয় মন্দিরের ঠাকুরের মূর্তিগুলো ভেঙে তছনছ করেছে দুর্বৃত্তরা। এতে ওই এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের মাঝে আসন্ন দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে সকল আনন্দ ম্লান হতে বসেছে। ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত সেটা বের করার জন্য জোর তদন্ত চালাচ্ছে থানা পুলিশ।
গত রোববার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটে কুষ্টিয়ার কুমারখালি পৌর এলাকার খয়েরচারা গ্রামের হালদার মাতৃ সার্বজনীন দুর্গামন্দির ও রাজ কুমার কালী মন্দিরে। শত বছরের ঐতিহ্যবাহী এ মন্দিরে দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রতিমা তৈরির কাজ ছিল প্রায় শেষের দিকে। দুই মন্দিরের কর্তৃপক্ষ গতকাল সোমবার ভোরে ঘুম থেকে উঠে দেখে মূর্তিগুলোর হাত, পা, মাথা দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ কুমারখালি শাখার সভাপতি নব কুমার দত্ত বলেন, এ ধরনের ঘৃণ্য কাজের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বের করে অবশ্যই কঠিন সাজা দেয়া উচিত। কোনো সভ্য সমাজের মানুষ এ ধরনের কাজ করতে পারে না। আরেকটি সংগঠনের সভাপতি নিতাই কুমার কুণ্ডু বলেন, দুর্গাপ্রতিমা, লক্ষ্মী, স্বরস্বতী, কার্তিক ও গণেশ মূর্তির মাথা ভাঙচুর করা হয়েছে। এলাকাবাসী জানান, তেবাড়িয়া, খয়েরচারা ও আগ্রাকুণ্ডা গ্রামে বেশ কিছু উঠতি বয়সের যুবক সব সময় বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য সেবন করে থাকে। তাদের একটি অংশ এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে। আরেকটি সূত্র জানায়, ওই এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের জমিজমা কুক্ষিগত করার জন্য একটি চক্র সক্রিয়। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানলে হয়তো তারা এলাকা ছেড়ে চলে যাবে। আর এ সুযোগে ওই চক্রটি তাদের জমি কম মূল্যে ক্রয়ের চেষ্টা করবে। উভয় মন্দির কমিটির নেতৃবৃন্দ নিরাপত্তাহীনতার কারণে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না। যদিও তারা প্রকাশ্যে বলছেন, এ ব্যাপারে তাদের কিছুই জানা নেই।
সংবাদ পেয়ে কুমারখালি পৌরসভার মেয়র নুর"ল ইসলাম আনছার, ইউএনও মো. মানিকহার রহমান, পুলিশের এএসপি (সদর সার্কেল) আব্দুল হালিম, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি নব কুমার দত্ত, নিতাই কুমার কুণ্ডু দুটি মন্দির পরিদর্শন করেন। মন্দির পরিদর্শনকালে কুমারখালির ইউএনও মো. মানিকহার রহমান বলেন, প্রকৃত অপরাধীরা কোনো অবস্থাতেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পাবে না। তদন্ত সাপেক্ষে অপরাধীদের শনাক্ত করতেই হবে। এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ কুষ্টিয়া জেলা শাখা। পূজা উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে এক বার্তায় পরিষদের সভাপতি এডভোকেট অনুপ কুমার নন্দী জানিয়েছেন, যারা মূর্তি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের কঠিন শাস্তি হওয়া উচিত। আর এজন্য জেলা পুলিশ প্রশাসনকে দোষীদের চিহ্ণিত করে তাদের বির"দ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। একই সঙ্গে গর্হিত কাজটির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি।
ভোরের কাগজ
No comments:
Post a Comment