শেরপুর প্রতিনিধি
সদর উপজেলার ভাতশালা ইউনিয়নের হাওড়াগড় গ্রামের একদল প্রভাবশালী ব্যক্তি স্থানীয় জগন্নাথ দেবের মন্দিরের ৭ একর দেবোত্তর সম্পত্তি দীর্ঘদিন ধরে জবরদখল করে রেখেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শেরপুর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ, মন্দির কমিটি ওই সম্পত্তি উদ্ধারের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছে।
হাওড়াগড় জগন্নাথ দেবের মন্দির কমিটির সভাপতি রবীন্দ্র চন্দ্র দাস (৭৩) ও পূজারী দিলীপ চক্রবর্তী জানান, মুক্তাগাছার মহারাজা শশীকান্ত আচার্য চৌধুরী শেরপুরের হাওড়াগড় এলাকায় শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের মন্দিরের জন্য ৭ একর ৭ শতাংশ জমি দান করেন, যা দেবোত্তর সম্পত্তি হিসেবে সিএস আরওআর ও বিআরএস রেকর্ডভুক্ত রয়েছে। কালক্রমে স্থানীয় প্রভাবশালীরা ওই সম্পত্তি জবরদখল করে। কেউ কেউ জাল দলিলও তৈরি করে আসছে। মন্দির কমিটির কর্মকর্তারা জানান, স্থানীয় প্রভাবশালীরা ১৯৮৩ সালে এবং ১৯৯২ সালে এসব জমি জবরদখল করে নেয়। সম্প্রতি জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের চাপে সেলিম নামে এক জবরদখলকারী তার দখলে থাকা ২৮ শতাংশ জমি মন্দিরের অনুকূলে ফিরিয়ে দেয়। বর্তমানে সেখানেই একটি ছাপড়া ঘর তুলে জগন্নাথ দেবের বিগ্রহ স্থাপন করে পূজা অর্চনা চলছে।
এদিকে মন্দির কমিটির আবেদনের প্রেক্ষিতে শেরপুর সদর এসিল্যান্ড অফিস থেকে সরেজমিনে তদন্ত করে বেশকিছু সম্পত্তি জবরদখলের সত্যতা পাওয়া গেছে। গত ১০ ফেব্রুয়ারি এর তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়, স্থানীয় ডা. আবদুস সালামের জবরদখলে রয়েছে ১ দশমিক ২৭ একর, মোঃ শহীদুজ্জামান খোকার দকলে ১ দশক ৬৮ একর, আবু হায়দার আলী খানের দখলে দশমিক ৭০ একর এবং কমরুদ্দিন মাস্টারের দখলে দশমিক ৮১ একর জমি রয়েছে।
এসব জমি জবরদখলের ব্যাপারে ডা. আবদুস সালাম বলেন, ১৯৮২ সালে মন্দিরের তৎকালীন সেবায়েত বণিক্য দাস বৈরাগীর কাছ থেকে দশমিক ৯৬ একর সম্পত্তি ক্রয় করে তিনি ভোগদখল করছেন। তার বিরুদ্ধে মন্দিরের জমি জবরদখলের অভিযোগ ভিত্তিহীন।
এ ব্যাপারে শেরপুর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট শক্তিপদ পাল জানান, আমরা হাওড়াগড়ের জগন্নাথ দেবের মন্দিরের জমি উদ্ধার চাই। এ জন্য আমরা ডিসি-এসপির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি। তারা আইনগত বিষয় পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন বলে জানিয়েছেন।
সমকাল, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০০৮
No comments:
Post a Comment