গোপালগঞ্জে ধর্ষণের অভিযোগে অনিক এ্যাকোয়া ফার্মের মালিক গ্রেফতার

নিজস্ব সংবাদদাতা, গোপালগঞ্জ, ৩১ আগস্ট ॥ গোপালগঞ্জে এক নারী সহকর্মীকে জিম্মি করে যৌন-নিপীড়নের অভিযোগে অনিক এ্যাকোয়া ফার্ম নামে এক এনজিওর স্বত্বাধিকারী শেখ শাহাদত হোসেনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার বেলা ১১টায় শহরের মোহাম্মদপাড়া এলাকার একটি ভাড়াবাড়িতে যৌন নিপীড়ন করার সময় গোয়েন্দা পুলিশ হানা দিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। এ সময় পুলিশ সেখান থেকে যৌন-নিপীড়নের শিকার ওই নারীকে (অনিতা বিশ্বাস ৩৬) উদ্ধার করে। খবর পেয়ে গণমাধ্যম-কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ছবি তুলতে গেলে শাহাদত তাতে বাধা দেন এবং একুশে টেলিভিশনের ক্যামেরা কেড়ে নিয়ে আছড়ে ভেঙ্গে ফেলেন। জানা যায়, প্রায় ১৫ দিন ধরে শাহাদত তাকে ওই বাড়িতে আটকে রেখে যৌন নিপীড়ন করছিল।

নিপীড়নের শিকার ওই নারী (অনিতা বিশ্বাস) সাংবাদিকদের জানান, তিনি ২০০৩ সাল পর্যন্ত ঢাকায় বিদেশী সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশনের স্বাস্থ্য প্রকল্পে সার্ভিস প্রমোটর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বেশি টাকা বেতন দেয়ার কথা বলে ২০০৪ সালে মিনিটস প্রতিবেদক হিসেবে শাহাদত হোসেন তাকে অনিক এ্যাকোয়া ফার্মে চাকরি দেন। এরপর বেরিয়ে আসতে থাকে শাহাদতের আসল চেহারা। চাকরির দেড় মাসের সময় ময়মনসিংহে একটি সেমিনারে যোগদানের কথা বলে তাকে ময়মনসিংহে নিয়ে সেখানকার একটি হোটেলে তার সঙ্গে রাতযাপনে বাধ্য করে এবং জোরপূর্বক যৌন হয়রানি করে। এরপর শাহাদত তাকে নিয়ে আসে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার তার গ্রামে অনিক এ্যাকোয়া ফার্মে। সেখানে থাকাবস্থায় প্রতিনিয়ত তাকে যৌনমিলনে বাধ্য করে। একপর্যায় ভুল বুঝিয়ে সে তার স্বামী থেকে তাকে বিচ্ছিন্ন করে এবং তখন সে তার একমাত্র কন্যাসন্তান নিয়ে অসহায় ও জিম্মি হয়ে পড়ে। সে সনাতন ধর্মে বিশ্বাসী হলেও তাকে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে মুসলিম ধর্ম গ্রহণে বাধ্য করে এবং হলফনামায় তার নাম লেখা হয় আয়েশা বেগম।
জানা যায়, গোপালগঞ্জ সদরের খেলনা গ্রামের ঠান্ডু শেখের ছেলে এই শাহাদত হোসেন। এলাকায় শাহাদত হিসেবে জানলেও বিদেশে তিনি শাহ্ বলেই পরিচিত। শৈশব থেকেই চরম দারিদ্র্যের মাঝে বেড়ে ওঠেন তিনি।
দৈনিক জনকণ্ঠ, ১ সেপ্টেম্বর, ২০১২, লিংক

No comments:

Post a Comment