ভোলার 'ভেণ্ডারবাড়ী' এক অভিশপ্ত রাতের ভয়াবহ সাক্ষী

মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ (২)
তপন বিশ্বাস ॥ ২০০১ সালে ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর নেমে আসে অমানিশার অন্ধকার। চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। ধর্ষণের শিকার হয়েছে যত্রতত্র। খুন, লুণ্ঠন, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, অগ্নিনসংযোগসহ সব মানবতাবিরোধী সহিংসতায় আক্রান্ত নিরীহ ব্যক্তি ও পরিবারের শোক, দুঃখ ও বেদনা মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। তারই কিছু কাহিনী তুলে ধরা হলো ধারাবাহিকের এ পর্বে।

৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী সহিংস ঘটনা ঘটলেও সকল মাত্রা ছাড়িয়ে শীর্ষে অবস্থান করে ভোলা জেলার লালমোহন থানার লর্ড হার্ডিঞ্জ ইউনিয়নের অন্নদা প্রসাদ গ্রামের ভোন্ডারবাড়ীর ঘটনা। নির্বাচনের পর পরই শুরু হয় দেশব্যাপী আওয়ামী লীগ কর্মী-সমর্থক বিশেষ করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন। যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ এবং ভেন্ডারবাড়ী থেকে থানা প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে হওয়ার কারণে অনেক ক্ষেত্রে প্রশাসনের লোকজন এমনকি সংবাদকর্মীরাও নির্বাচনে সঠিক তথ্য সংগ্রহ করতে পারেনি। বাড়িঘর লুটপাট, চাঁদা দাবি, এমনকি নারী ধর্ষণের অজস্র ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে অধিকাংশ ঘটনাই পুলিশের নথিভুক্ত হয়নি।

তদন্ত কমিশনের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০০১ সালের ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ১ অক্টোবর রাতে হামলা, ধর্ষণ, নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ ইত্যাদি ঘটনায় লালমোহনের বিভিন্ন এলাকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকেরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। নির্বাচনের পরদিন ২ অক্টোবর অন্নদা প্রসাদ গ্রামের আশপাশের গ্রামের সংখ্যালঘু মহিলারা নিরাপদ স্থান হিসেবে বেছে নিয়েছিল গ্রামের চার পাশের ধানক্ষেত ও জলাভূমি পরিবেষ্টিত ভেন্ডারবাড়ী। অর্ধশতাধিক মহিলা তাদের সম্ভ্রম রৰার জন্য সেখানে আশ্রয় নেয়। কিন্তু সে বাড়িটিও সন্ত্রাসীদের নজর এড়ায়নি। নরপিশাচদের আগুনে আত্মাহুতি দিল শত নারী। শত শত বিএনপি সন্ত্রাসী ৮/১০টি দলে বিভক্ত হয়ে অত্যনত্ম পরিকল্পিতভাবে ওই রাতে হামলা চালায়। একের পর এক দল হামলা চালিয়ে অসহায় সংখ্যালঘু পরিবারের মেয়ের ধর্ষণ করতে থাকে। শত চেষ্টা করেও মহিলা তাদের সম্ভ্রম রক্ষা করতে পারেনি। অনেক সম্ভ্রম হারানোর ভয়ে, প্রাণের মায়া তুচ্ছ করে অন্ধকারে ঝাঁপিয়ে পড়ে আশপাশের জলাশয়ের ধানক্ষেতে। মহিলারা পানিতে ঝাঁপিয়ে সম্ভ্রম রক্ষার চেষ্টা চালালে রাজনৈতিক মদদপুষ্ট এ সন্ত্রাসীরা তাদের সন্তানদের পানিতে ফেলে দেয়ার হুমকি দিলে সন্তানদের জীবন রক্ষায় তারা উঠে আসতে বাধ্য করে। আর উঠে আসলেই তারা গণধর্ষণের শিকার হয়। এভাবে ধর্ষিত হয় আট বছরের শিশু, লাঞ্ছিত হয়েছে ৬৫ বছরের বৃদ্ধা, মা, মেয়ে, শাশুড়ি, পুত্রবধূকে ধর্ষণ করা হয়েছে এক সঙ্গে। এ সময় ছেলের চেয়েও ছোট বয়সী সন্ত্রাসী ধর্ষণ করেছে মায়ের চেয়েও বেশি বয়সের নারীকে। সন্ত্রাসীরা ছাড়েনি পঙ্গু নারী শেফালী রানী দাসকেও। পঙ্গু হওয়া সত্ত্বেও অন্যদের মতো সন্ত্রাসীদের কবল থেকে সম্ভ্রম বাঁচাতে শেফালী রানীও পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু নিয়তির নির্মম পরিহাস। পঙ্গু শেফালী পালানোর চেষ্টাকালে পুকুর পাড়ে হলুদ ক্ষেতে পড়ে যায়। তখন দুই সন্ত্রাসী তাকে ধরে ফেলে এবং তার পরনের কাপড় ছিঁড়ে তাকে বিবস্ত্র করে দুই সন্ত্রাসী পালাক্রমে ধর্ষণ করে। সন্ত্রাসীদের পাশবিক অত্যাচারে এক পর্যায়ে শেফলী জ্ঞান শূন্য হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে পলফ্যাশন হাসপাতালে তার চিকিৎসা করানো হয়। সম্ভ্রম হারিয়ে অনেকেই লজ্জায়, ভয়ে দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যায়।

তদন্ত রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভেন্ডারবাড়ীতে নারকীয় এ পাশবিক ঘটনার বিএনপি সন্ত্রাসীদের মধ্যে অন্যতম ছিল অন্নপ্রসাদ গ্রামের আবু, সেলিম, দুলাল, জাকির পিং আঃ খালেক। এছাড়া ওই সন্ত্রাসীদের মধ্যে ছিল দুলাল পিতা-কব্বর আলী সাং চাঁদপুর, আলমগীর পিতা- আঃ মুন্নাফ সাং অন্নদাপ্রসাদ, সোহাগ মিয়া সাং অন্নদাপ্রসাদ, নজরম্নল পিতা- মৃত বদিউজ্জামান সাং চাঁদপুর, মোঃ আক্তার পিতা-আঃ হাই সাং ফাতেমাবাদ গং জোর পূর্বক গংগাচরণ দাস পিতা- মৃত বৈকুন্ঠ কুমার দাস সাং অন্নপ্রসাদের বাড়িতে প্রবেশ করে তার বিভিন্ন মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। আসামিরা তার স্ত্রী শেফালী বালা দাস ও কন্যা সুষমা রানী দাসকে ধর্ষণ করে। ওই গ্রামের অনেকে এখন ভারতে অবস্থান করছে। এখানে বিভিন্ন এলাকা থেকে এসে আশ্রয় নেয়া ৬০/৭০ মহিলা ধর্ষণের শিকার হয়।

তদন্ত কমিশন লালমোহনের ভেন্ডারবাড়ী নারকীয় পৈশাচিক ঘটনায় জড়িত কিছু সন্ত্রাসীদের নাম উল্লেখ করেছে তাদের প্রতিবেদনে। এর মধ্যে ১. দুলাল, পিতা- আলী আকবর, সাং চাঁদপুর। ২. ইব্রাহিম খলিল, পিতা-মৃত মৌলভী মোহাম্মদ, সাং অন্নদাপ্রসাদ। ৩. আকতার (৩৫) পিতা-জাফর উল্যাহ, সাং চাঁদপুর। ৪. সাইফুল (৪০) পিতা-ওসমান গনি, সাং-অন্নদাপ্রসাদ। ৫. শাহাবুদ্দিন পিতা- আঃ হাই সাং-চাঁদপুর। ৬. মোতাহার (৩৫), পিং- সামছুল হক, সাং-ফাতেমাবাদ, ৭. ভুট্টো, পিতা- মোসত্মফা, সাং-অন্নদাপ্রসাদ, ৮.নান্নু (৩৭), পিতা- লুৎফর রহমান, সাং ফাতেমাবাদ। ৯. আলমগীর, পিতা-আবুল হাশেম, সাং-সৈয়দাবাদ, ১০ সেলিম, পিতা-ইয়াসিন মাস্টার, সাং-অন্নদাপ্রসাদ। ১১. জাকির, পিতা- আঃ মালেক। ১২. নজরম্নল, পিতা বদিউজ্জামান, ১৩. আবু, পিতা- জলিল, ১৪. মিজান, পিতা-ইসহাক, ১৫. ইদ্রিস, পিতা-আঃ কাদের ১৬. মোশারফ, পিতা- শাহাবুদ্দিন মিয়া, ১৭. বাবলু, পিতা-নুরম্নজ্জামান, ১৮. কামরুল, পিতা-নুরম্নজ্জামান, সর্ব সাং অন্নাদপ্রদান লালমোহন বোলা। অজ্ঞাতনামা ২০/২৫ জন যাদের নাম ঠিকানা তদনত্মের সময় কেউ বলেনি বা বলতে পারেনি।

অন্তঃসত্ত্বা জয়ন্তী-সংগ্রামের কাহিনী ॥
৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরদিন ২ অক্টোবর অষ্টাদশী গ্রাম্য গৃহবধূ জয়ন্তী যখন প্রথম সনত্মানের জন্মমুহূর্তে প্রসব বেদনায় কাতরাচ্ছে, ঠিক সে সময় দিন দুপুরেই বেলা আনুমানিক ৩টায় ভোলা জেলার লালমোহন উপজেলার সাত নন্বর পশ্চিম চর উমেদ ইউনিয়নের জাহাজমারা গ্রামে হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। তদন্ত রিপোর্টে বলা হয়, স্থানীয় বিএনপি নেতা ইলিশা কান্দি গ্রামের জাহাঙ্গীর মাতবরের নেতৃত্বে অর্ধশতাধিক সশস্ত্র সন্ত্রাসী দা, ছুরি, লাঠি ও বল্লমসহ তাদের কুঁড়েঘরে হামলা চালায়। হামলায় গ্রামবাসী ভয়ে পালিয়ে যেতে থাকে। গ্রামের বিভিন্ন ঘরে ঢুকে সন্ত্রাসীরা হামলা চালাতে থাকে। জয়ন্তীর শাশুড়ি মুক্তিরানী একজন স্থানীয় ধাত্রীকে দিয়ে তার শিশু প্রসব করাচ্ছিল। শিশু প্রসবের মুহূর্তে সন্ত্রাসীরা দা ও ছুরি দিয়ে জয়ন্তীর কুঁড়ে ঘরের বেড়ায় কোপ মারতে থাকে। ধাত্রী সন্ত্রাসীদের ভয়ে ও আতঙ্কে পালিয়ে যায়। ঘরে শুধু অসহায় জয়ন্তী ও তার শাশুড়ি। সন্ত্রাসীরা তখনও ঘরের বেড়া ভাঙার চেষ্টা চালাচ্ছে। এ মুহূর্তে জন্ম নেয় একটি পুত্র সন্তান। হতবুদ্ধি মুক্তিরানী কোন উপায় না দেখে জয়ন্তীকে ভালভাবে জড়িয়ে ধরে নবজাতককে পরনের শাড়ি দিয়ে পেঁচিয়ে ঘরে নিয়ে অপর দিকের বেড়া ভেঙে জয়ন্তীকে টেনেহিঁচড়ে বের করে আনে। পরবর্তীতে ওই অবস্থায় দৌড়ে পালায় পাশের ধানক্ষেতে নিরাপদ আশ্রয়ের আশায়। সদ্যপ্রসূতি মা জয়ন্তীর তখন দৌড়ে পালানোর মতো অবস্থা ছিল না। কিন্তু মৃত্যু ভয়ে ভীত মুক্তি রানী তাকে জোর করে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল। তখনও পর্যনত্ম সদ্যজাত শিশুটিকে মায়ের নাড়ি থেকে বিচ্ছিন্ন করার সময় পায়নি মুক্তি রানী। তাদের মতো অনেকেই সেই ধানক্ষেতের মধ্যে অপেক্ষাকৃত উঁচু একটি জায়গায় নিরাপদ আশ্রয়ের আশায় এসে জড়ো হয়েছিল। সেখানে একজনের কাছ থেকে একটি ব্লেড নিয়ে শিশুটির নাড়ি কাটে মুক্তি রানী। রাত নয়টা পর্যন্ত সেখানে থেকে সন্ত্রাসীদের চলে যাওয়ার খবর নিশ্চিত করে তারা পুনরায় ঘরে ফিরে যায়। এ ঘটনার কারণে সদ্য ভূমিষ্ঠ সন্তানের নাম রাখা হয় সংগ্রাম।

গ্যাং রেপ ॥ নির্বাচনের পরদিন বিভিন্ন স্থানে চলে গ্যাংরেপ। ঝালকাঠির নলছিটিতে একই পরিবারের চম্পা রানী, পুতুল রানী, মিনতী রানী, মালতী রানীকে এক সঙ্গে ধর্ষণ করে এ নরপিশাচরা। বিএনপির সন্ত্রাসীরা নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার অপরাধে রাতে বাড়িতে এসে লুটপাট চালায়। পরবর্তীতে দল বেঁধে একই পরিবারের চার মা-মেয়ে ধর্ষণ করে।

দুই সন্তানের সামনে মাকে ধর্ষণ ॥ ঘটনাটি ঘটে সাতক্ষীরার আশাশুনিতে। গ্রামের নাম খালিয়া। আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে প্রচারে অংশ নেয়ায় একই গ্রামের বিএনপি ক্যাডার শাহাজাহান, বটু, ইসমাইল ও সোবহানের লোলুপ দৃষ্টি থেকে সম্ভ্রম রক্ষা করতে পারেনি তারামন বিবি। ১৫ অক্টোবর রাতে স্বামী ও পুত্র-কন্যার সামনে গণধর্ষণের শিকার হয়।

মায়ের সামনে মেয়েকে ধর্ষণ ॥ নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার অপরাধে ফরিদপুরের ভাংগায় আজিমনগর গ্রামে একটি সংখ্যালঘু পরিবার বর্বরতম নির্যাতনের শিকার হয়। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর বিএনপি মৌলবাদী সমর্থকরা ওই পরিবারের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করেই ক্ষান্ত হয়নি। ঘরের মধ্যে সারারাত মদ খেয়ে পৈশাচিক উল্লাসে মায়ের সামনেই নকুল মালোর কলেজ পড়ুয়া মেয়েকে ধর্ষণ করে। কমিশনের রিপোর্টে বলা হয় ২০০১ সালের ৬ অক্টোবর রাত ৯টায় ভাংগায় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেনের ভাই পলাশ, মোঃ সেকেন, জামাল, এসকেন, কামাল ও টেক্কা নামে সাত বিএনপি সমর্থক ও সন্ত্রাসী আজিমনগর গ্রামে ওই সংখ্যালঘুর বাড়িতে হামলা চালায়। সন্ত্রাসীরা নৌকায় ভোট দেয়ার মজা দেখাচ্ছি বলে পরিবারের কর্তাকে খুঁজতে থাকলে প্রাণভয়ে তিনি ঘরের পেছনের দরজা খুলে পালিয়ে যায়। এসময় সন্ত্রাসীরা ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে মদ খেয়ে মাতাল অবস্থায় মায়ের সামনেই ওই পরিবারের কলেজ পড়ুয়া কন্যাকে সম্পূর্ণ উলঙ্গ করে ধর্ষণ করতে শুরু করে। মা সন্ত্রাসীদের হাতে পায়ে ধরে মেয়ের ইজ্জত ভিৰা চাইলে সন্ত্রাসীরা তাকেও বেদম মারপিট করে। রাত ১টা পর্যন্ত এ পৈশাচিক নির্যাতন শেষে সন্ত্রাসীরা ঘরের দামি জিনিসপত্র লুট করে কলেজ পড়ুয়া ওই মেয়েকে অন্যত্র তুলে নিয়ে পুনরায় ধর্ষণ করে এবং ভোরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় বাড়ির সামনে ফেলে যায়। ভোরে ওই পরিবারটি ধর্ষিতা মেয়েসহ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় পালিয়ে যায়। ঘটনার সংবাদ পেয়ে পুলিশ গোপালগঞ্জ থেকে পরিবারটিকে এলাকায় ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করে। লোকলজ্জার ভয়ে মেয়েটিকে তার এক আত্মীয়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। সন্ত্রাসীরা ঘটনার পর থেকে ওই পরিবারসহ অন্যান্য সংখ্যলঘু পরিবারকে হুমকি দেয় এবং এ ঘটনা কাউকে না বলার হুমকি দেয়।

সূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ, ১৩ জুন

3 comments:

  1. ওরাকি মানুষ

    ReplyDelete
  2. ছোটবেলা হতেই কোরান থেকে চুদাচুদি ছাড়া আর কি শিখসে? মাকেও চুদে বোনকেও চুদে আবার মেয়েকেও চুদে। এটাই মনে হয় শ্রেষ্ঠ নবী শিক্ষা।

    ReplyDelete
    Replies
    1. This comment has been removed by the author.

      Delete