সিলেটে বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয় থেকে একের পর এক মূর্তি চুরি

।। নজরম্নল ইসলাম মহির, মৌলভীবাজার সংবাদদাতা ।।

কোটি টাকা মূল্যের কষ্টি পাথরের মূর্তি চুরির সাথে জড়িত সিন্ডিকেট চক্রগুলো আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে শুরম্ন করেছে সিলেট বিভাগে। প্রতি সপ্তাহেই কোন না কোন উপজেলার ধর্মীয় উপাসনালয় থেকে চুরি হয়ে যাচ্ছে কয়েকশ’ বছর পুরনো এসব প্রত্ন সম্পদ। মূর্তি চুরির এই সিন্ডিকেটের অপতৎপরতা রম্নখতে পারছে না প্রশাসন।

সম্প্রতি মূর্তি চুরির ঘটনা ঘটেছে মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার পানিশাইলস্থ শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ জিউর আখড়ায়। প্রায় ৫শ’ বছরের পুরনো রাধা গোবিন্দের এই মূর্তিটি চুরি করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। সর্বশেষ গত ২৪ জুলাই হবিগঞ্জের কালিমন্দিরে হানা দিয়ে দুর্বত্তরা মূল্যবান স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে পালিয়ে যায়। শ্রীমঙ্গল উপজেলায় মূর্তি চুরির ঘটনাটি ঘটে গত ১৫ ফেব্রম্নয়ারি। ২০০৩ সালের ১৭ নভেম্বর কমলগঞ্জের পতন উষার ইউনিয়নের শ&্রী শ্রী রাধামাধবের মন্দির থেকে ৯টি মূর্তি চুরি হয়। ২০০৪ সালের ২১ জুন রাজনগর উপজেলার গয়ঘর গ্রামের গোপিকা চক্রবর্তীও উপাসনালয়ের তালা ভেঙ্গে ১০ কেজি ও ১৫ কেজি ওজনের দুটি কষ্টি পাথরের মূর্তি নিয়ে যায় পাচারকারীরা।

২০০৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর সিলেট জেলার ওসমানীনগর থানার সাদিপুর ইউনিয়নের ইব্রাহিমপুর গ্রামের একটি আখড়া থেকে চারশ’ বছর পুরনো একটি মূর্তি চুরি হয়। মূর্তিটি আজও উদ্ধার করতে পারেনি। গত ১৫ ফেব্রম্নয়ারি শ্রীমঙ্গল উপজেলার হরিণাকান্দি গ্রামের অতুল শর্মার বাড়ির দেবালয় থেকে কষ্টি পাথরের বিষ্ঞু দেবতার শালগ্রাম শিলা চুরি করে নিয়ে যায় পাচারকারীরা।

গত ১০ জুলাই সিলেট নগরীর বড়বাজার এলাকার একটি মন্দির থেকে কষ্টি পাথরসহ বিভিন্ন ধরনের ৩টি মূর্তি চুরি করে নিয়ে যায় দুবর্ৃত্তরা। এ ব্যাপারে কোতোয়ালী থানায় মামলা হয়েছে।

গত ১৪ জুলাই রাজনগর উপজেলার পানিশাইলস্থ শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ জিউর আখড়া থেকে ৫শ’ বছরের পুরনো কোটি টাকা মূল্যের রাধা গোবিন্দের মূর্তি চুরি করে নিয়ে যায় দুবর্ৃত্তরা। এ ঘটনায় সাজুল মিয়া (২৫) নামের একজনকে আটক করেছে পুলিশ। এছাড়াও শ্রীমঙ্গলের ঐতিহাসিক শিব মন্দির থেকে শিবলিঙ্গ চুরি, দক্ষিণ সুনামগঞ্জের একটি উপাসনালয় থেকে মূর্তি চুরি ও জকিগঞ্জের বেশ কয়েকটি উপাসনালয় থেকে মূর্তি চুরির ঘটনা ঘটেছে। হবিগঞ্জ জেলার একাধিক উপজেলা থেকেও চুরি হয়েছে মূর্তি। সর্বশেষ গত শুক্রবার ২৪ জুলাই রাতে হবিগঞ্জের কালি মন্দিরে হানা দেয় দুবর্ৃত্তরা। মূর্তি চুরি করতে না পারলেও তারা উপাসনালয় থেকে মূল্যবান স্বর্ণালংকার চুরি করে পালিয়ে গেছে।

সিলেট বিভাগের ৪টি জেলার হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অসিত ভট্টাচার্য মূর্তি উদ্ধার না করতে পারার জন্য প্রশাসনের নিষি্Œয়তাকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা সম্পর্কে আমরা সব সময়ই নেগেটিভ ধারণা পোষণ করি। তাদের সাহায্য-সহযোগিতা পাওয়া যায় না বললেই চলে। মামলা বা জিডি করলে প্রথম প্রথম ক’দিন তৎপর থাকে পুলিশ। এরপর তারা ঝিমিয়ে পড়ে।

ইত্তেফাক, ১ আগস্ট, ২০০৯

No comments:

Post a Comment