খাগড়াছড়িতে মন্দিরে সন্ত্রাসী হামলা, মূর্তি ভাংচুর-লুট

খাগড়াছড়িতে মন্দিরে সন্ত্রাসী হামলা, মূর্তি ভাংচুর-লুট

খাগড়াছড়ি, জুন ০৬ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম) পানছড়ি উপজেলা বাজার দেবালয় মন্দিরে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে একটি সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী দল হামলা চালিয়ে ৭টি মূর্তি ভাংচুর করেছে।

এ সময় সন্ত্রাসীরা নগদ ৩০ হাজার টাকা ও দুই ভরি স্বর্ণালাংকর লুট করে নিয়ে যায়।

বাজারের নৈশ প্রহরীরা মাসুদুর রহমান রানা (৩৪) নামে একজনকে হাতেনাতে আটক করে। পরে তার দেওয়া অনুযায়ী পুলিশ বকুল মাষ্টার পাড়ার বাসিন্দা অজিত বড়�য়া কালাকে (২৬) আটক করা হয়।

এ ঘটনায় মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি অনিল কান্দি দে পানছড়ি থানায় একটি মামলা করেছেন।

শুক্রবার সকালে পানছড়ি জোনের সেনা কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবু তাহের ইব্রাহিম, সহকারী পুলিশ সুপার ফয়জল আহমদ, পানছড়ি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মামুনুর রশিদ, পানছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. একরাম ও সনাতন সমাজ কল্যাণ পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির একটি প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

সেনা কমান্ডার তাৎক্ষণিকভাবে মন্দিরের জন্য নগদ ১০ হাজার টাকা অনুদান দেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত মূর্তিগুলো মেরামত ও দুটি গেইট নির্মাণ করে দেওয়ার আশ্বাস দেন।

সহকারী পুলিশ সুপার মো. ফয়জল আহমদ জানান, এ ঘটনার পেছনে জাতীয় বা আন্তর্জাতিক কোন মূর্তি পাচারকারী চক্র জড়িত রয়েছে কিনা তা তদন্ত করে দেখা হবে। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হবে।

মন্দিরের প্রধান পুরোহিত শিব শঙ্কর ভাট্টাচার্য্য জানান, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসীরা দেবালয় মন্দিরে প্রবেশ করে। দেবালয় মন্দিরের অভ্যন্তরে কালি মন্দির, দুর্গা মন্দির, রাধাকৃষ্ণ মন্দির ও জগন্নাথ মন্দির নামে ৪টি পৃথক মন্দির রয়েছে।

তিনি জানান, সন্ত্রাসীরা প্রথমে জগন্নাথ মন্দিরের তালা ভেঙ্গে উপাসনালয় ঘরে ঢুকে কাঠের তৈরি বলরাম মূর্তি, সুভদ্রা মূর্তি, জগন্নাথ দেবের মূর্তিসহ ৬টি মূর্তি ভাংচুর করে। উপাসনালয় ঘরের মূল্যবান জিনিসপত্রও তছনছ করে তারা। এছাড়া মূর্তির গলায় থাকার দুই ভরি ওজনের সোনার অলংকারও তারা নিয়ে গেছে।

পরে উপসনালয় ঘরের পার্শ্ববর্তী মন্দির পরিচালনা কমিটির কার্যালয়ে ঢুকে আলমারি ভেঙ্গে মন্দিরের নির্মাণ কাজের জন্য রাখা ৩০ হাজার টাকা লুট করে।

জগন্নাথমন্দির ভাংচুর করার পর কালি মন্দিরের প্রবেশ পথের তালা ভেঙ্গে উপাসনালয়ের প্রবেশের চেষ্টা করে। এ সময় তিনি টের পেয়ে চিৎকার করতে শুরু করলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।

পানছড়ি সদর ইউপি চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম নয়ন বলেন, মূর্তি চোরদের কোন সংঘবদ্ধ দল এ ঘটনা ঘটাতে পারে। তিনি এ ঘটনার নিন্দা জানান।

খাগড়াছড়ি সনাতন সমাজ কল্যাণ পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক সুধীর কুমার দত্ত বলেন, এটি পরিকল্পিত ঘটনা। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য একটি মহল এ ঘটনা ঘটিয়েছে।

দেবালয় মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি অনিল কান্তি দে ও সাধারণ সম্পাদক সনজিৎ পাল মিঠু বলেন, ১৯৩৯ সালে এ মন্দির প্রতিষ্ঠা হয়। এরপর থেকে কোন সময় এ রকম ঘটনা ঘটেনি। পানছড়ি উপজেলায় হিন্দু, মুসলিম, চাকমা, মারমা স�প্রীতির বন্ধনে বসবাস করে আসছি।

No comments:

Post a Comment