বাগেরহাটে প্রতারণার শিকার ছাত্রীর আত্মহত্যা ॥ ওড়নায় লেখা পত্র উদ্ধার

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাগেরহাট, ২২ নবেম্বর ॥ জেলার শরণখোলা উপজেলার মধ্য বাধাল গ্রামে প্রেমে প্রতারণার শিকার কনিকা নামে এক স্কুলছাত্রী ক্ষোভে-দুঃখে শরীরে জড়ানো ওড়নায় পত্র লিখে আত্মহত্যা করেছে। বৃহস্পতিবার ভোরে বাড়ির বাগানে সকলের অলখ্যে গলায় ফাঁস দিয়ে সে আত্মহত্যা করে। পুলিশ আত্মহত্যার প্ররোচণার অভিযোগে আব্দুর রাজ্জাক নামে এক যুবককে আটক করেছে। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা হয়েছে।
আত্মহত্যার জন্য রাজ্জাককে দায়ী করে কনিকা নিজের ওড়নায় লিখে গেছে, ‘রাজ্জাক তোমার সঙ্গে আমার বোঝাপড়া ওই পারে হবে। তোর আল্লাহ তোকে ক্ষমা করবে না। ...আমার জীবনটা ধ্বংস করে দিলি, তোর সঙ্গে বোঝাপড়া হবে পরজনমে- বিদায় বন্ধু।’ একটি সম্পূর্ণ ওড়নাজুড়ে রাজ্জাকের উদ্দেশ আরও অনেক কথা লিখে যায় কনিকা।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, মধ্য বাধাল গ্রামের সুশীল চন্দ্র মিস্ত্রির মেয়ে কনিকা উপজেলার উত্তর কদমতলা গ্রামে বড় বোন মনিকার বাসায় থাকার সুবাদে প্রতিবেশী জাফর তালুকদারের ছেলে রাজ্জাকের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রায় দুই বছর ধরে তাদের মধ্যে প্রেম চলতে থাকে। একপর্যায়ে কনিকা বিয়ের জন্য রাজ্জাককে চাপ দিলে সে ধর্মের অজুহাত দেখিয়ে বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখান করে। এতে সে ক্ষোভে-দুঃখে বাড়ির একটি আম গাছের সঙ্গে গলায় ওড়নায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। ভোরে মা খুশি রানী (৪২) ঘুম থেকে উঠেই আমগাছে মেয়েকে ঝুলতে দেখে ডাকচিৎকার শুরু“ করেন। পরে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে পুলিশে খবর দেয়। শরীরে জড়ানো ওড়নায় লেখা পত্র উদ্ধার করা হয়। কনিকা উপজেলার ডিএন কারিগরি কলেজের দশম শ্রেণীর ছাত্রী এবং রাজ্জাক রায়েন্দা পাইলট হাইস্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থী। শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আবুল কালাম আজাদ পিপিএম জানান, কনিকার বড় বোন মনিকা রানী বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার আত্মহত্যার প্ররোচণার অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন। আসামি রাজ্জাককে গ্রেফতার করা হয়েছে।

দৈনিক জনকণ্ঠ, ২৩ নভেম্বর, ২০১২। লিঙ্ক

No comments:

Post a Comment