হাটহাজারীতে ক্ষতিগ্রস্ত মন্দির সংস্কার হয়নি সাত মাসেও

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ক্ষতিগ্রস্থ মন্দির
চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ক্ষতিগ্রস্থ মন্দির
Mon, Oct 29th, 2012
   

তাবারুল হক
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম, অক্টোবর ২৯ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- আদালতের নির্দেশনার সাত মাস পেরিয়ে গেলেও চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত মন্দির সংস্কারের কাজ শুরু হয়নি।

ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন মন্দিরের নিরাপত্তায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েনে আদালতের নির্দেশ থাকলেও তাও উপেক্ষিত বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

এ বছরের ৯ ও ১০ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার নন্দীরহাটে লোকনাথ সেবাশ্রমসহ তিনটি মন্দির এবং উপজেলা সদরে কয়েকটি মন্দির এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের বসতঘর-দোকানপাটে ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালানো হয়।

এরপর ২৬ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুুরী মানিক ও বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের হাই কোর্ট বেঞ্চ ভাংচুর ও পুড়িয়ে দেয়া মন্দির, ঘরবাড়ি ও দোকানপাট আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সরকারকে নির্দেশ দেয়।

আদালতের নির্দেশের ছয় মাস পর গত ২৭ অগাস্ট এ বিষয় নিয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে এক সভা হয়। সভায় গণপূর্ত বিভাগ জানায়, ১০টি মন্দির, চারটি বসতবাড়ি ও একটি মসজিদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

গণপূর্ত বিভাগের কর্মকর্তারা ওই সভায় জানান, ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনা সংস্কারে ৬৫ লাখ ৩২ হাজার ৩০ টাকা সরকার থেকে বরাদ্দ পাওয়া গেছে। চট্টগ্রামের গণপূর্ত বিভাগ-২ এর মাধ্যমে সংস্কার কাজ চলবে।

গণপূর্ত বিভাগ-২, চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোশারফ হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, হাটহাজারী উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্ত ধর্মীয় স্থাপনার সংস্কার কাজ দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে করা হবে, যা এখন প্রক্রিয়াধীন।

তবে শিগগিরই কাজ শুরুর আশা প্রকাশ করেন তিনি।

এদিকে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা সংস্কার কাজে দেরিতে ক্ষোভ জানানোর পাশাপাশি মনে করছেন, যে অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনা মেরামতে তা অপ্রতুল।

হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের হাটহাজারী উপজেলা সভাপতি গোবিন্দ প্রসাদ মহাজন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গত ২৭ অগাস্ট জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে মন্দির সংস্কারের কোনো উদ্যোগ এখনো দেখা যাচ্ছে না।

“তারা আসলে কী করতে চাচ্ছেন, তারাই জানেন। সরকারের সব সিদ্ধান্ত জনগণকে জানানোর দরকার ছিল।”

সভায় ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে ক্ষতির পরিমাণ দুই থেকে আড়াই কোটি টাকা দাবি করা হলেও ৬৫ লাখ ৩২ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয় বলে জানান তিনি।

লোকনাথ সেবাশ্রম পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মনোজ কান্তি দে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, হামলায় তাদের আশ্রমের লাখ লাখ টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হলেও সরকারের পক্ষ থেকে সংস্কারের জন্য ৮০ হাজার টাকা ব্যয়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

ওই সভায় জানানো হয়, সংস্কার কাজ তদারকির জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানের একজন সদস্য নিয়ে একটি পর্যবেক্ষণ কমিটি গঠনও করবেন।

নন্দিরহাট এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত রাম ঠাকুর মন্দির পরিচালনা কমিটির অর্থ সম্পাদক নবকুমার গুপ্ত লালু বলেন, “আদালতের নির্দেশে সরকার মন্দিরের সংস্কার কাজ করবে বলে জানি। তবে কখন এ কাজ শুরু হবে তা নির্দিষ্ট করে সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের জানানো হয়নি।”

তিনি বলেন, আদালতের আদেশে কয়েক মাস মন্দিরে পুলিশ পাহারা ছিল। কিন্তু গত দুই মাস ধরে মন্দিরের নিরাপত্তায় কেউ নেই।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/টিএইচ/এমসি/এমআই/১৮৩৬ ঘ.

No comments:

Post a Comment