অর্পিত সম্পত্তি আইন বাস্তবায়নে বাধা একটি অসাধু চক্র

স্টাফ রিপোর্টার॥ প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের সদিচ্ছা থাকলেও এক শ্রেণির কর্মকর্তাদের অদক্ষতা ও অসাধু তৎপরতার জন্য অর্পিত সম্পত্তি আইন বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ ছাড়াও আইনটি যথাযথ বাস্তবায়িত না করতে একটি দুষ্টচক্র কাজ করছে। এদের ব্যাপারে সরকার ও দেশবাসীকে সজাগ এবং সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কয়েকটি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। একই সঙ্গে তারা দ্রুত অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ (সংশোধন) আইন ২০১১ বাস্তবায়নের দাবি জানান। শুত্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

জাতীয় প্রেসক্লাবে অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ (সংশোধন) আইন ২০১১ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া দ্রুততর করার দাবিতে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদ, এএলআরডি, অর্পিত সম্পত্তি আইন প্রতিরোধ আন্দোলন, ব্লাস্ট, আইন ও সালিশ কেন্দ্র, নিজেরা করি, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন এবং এইচডিআরসির যৌথ আয়োজনে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অর্পিত সম্পত্তি আইন প্রতিরোধ আন্দোলনের সভাপতি কামাল লোহানী ও সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, নিজেরা করির সমন্বয়ক খুশী কবির, এএলআরডি'র নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, ব্লাস্ট এর অনারারি পরিচালক ব্যারিস্টার সারা হোসেন, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট তবারক হোসেইন, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট রানাদাশ গুপ্ত ও কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম সদস্য কাজল দেবনাথ। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এ্যাডভোকেট রানাদাশ গুপ্ত। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আইন অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও প্রশাসনের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা সব কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করবেন এমনটা আশা করা হলেও আইনে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে তারা কিছু কিছু কাজ সম্পন্ন করলেও অনেক জরুরী কাজ সময়মতো সম্পন্ন হয়নি। এ ছাড়া অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন বাস্তবায়নের সার্বিক পরিস্থিতি যথেষ্ট স্বচ্ছ, সক্রিয় ও গতিশীল নয়।

সরকার অর্পিত সম্পত্তির 'খ' তালিকা গেজেট প্রকাশের সময়সীমা মূল আইনের ১৫০ দিনের অতিরিক্ত আরও ১৫০ দিন বাড়াবার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অর্পিত সম্পত্তির 'ক' তালিকা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়েছে বলে ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে দাবি করা হলেও বাস্তবে ভুক্তভোগী, আইনজীবী ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা বিজি প্রেসসহ যে সকল স্থানে গেজেট থাকার কথা সে সব স্থানে বারবার যোগাযোগ করা হলেও ওই গেজেটের কপি পাচ্ছেন না।

আশঙ্কা প্রকাশ করে লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, গেজেট যে তারিখে প্রকাশিত হচ্ছে আইনের সময়সীমার বাধ্যবাধকতার কারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাতে পেছনের তারিখ বসিয়ে দিয়েছেন। ফলে, প্রত্যর্পণ আইনের বিচার প্রার্থীদের আবেদন কর্তৃপক্ষ বা ট্রাইব্যুনালের কাছে জমা দেয়ার সময়সীমা কমে যাচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের উত্তরে কামাল লোহানী বলেন, দীর্ঘদিন পরেও আমাদের অর্পিত সম্পত্তির বিষয়টি নিয়ে কপচাতে হচ্ছে। লাখ লাখ পরিবারের ভাগ্য এর সঙ্গে জড়িত। তাদের সম্পদ ফিরিয়ে দেয়ার বিষয়টি আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। লিখিত বক্তব্যে মানবাধিকার ও নাগরিক অধিকার সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে সরকারের কাছে ছয়টি দাবি উত্থাপন করা হয়। এগুলো হলো অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন-২০১১ অনুযায়ী অর্পিত সম্পত্তি 'খ' তালিকা প্রকাশের সময়সীমা ১৫০ দিন বাড়ানোর যে প্রস্তাব মন্ত্রিসভা অনুমোদন করেছেন তালিকাটি যাতে সেই বর্ধিত সময়ের মধ্যেই প্রকাশ নিশ্চিত করা।

No comments:

Post a Comment