বরিশালে দু’গ্রুপের বিরোধ, মন্দির ভাংচুর লুট

নিজস্ব সংবাদদাতা, গৌরনদী, ৭ এপ্রিল ॥ বরিশাল নগরীতে মতুয়া সম্প্রদায়ের দু’গ্রপের বিরোধের জেরধরে মন্দিরে ব্যাপক ভাংচুর করে লুটপাট করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় একজনকে পিটিয়ে আহত করা হয়। শনিবার দুপুরে সিটি মেয়র শওকত হোসেন হিরণ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। দু’পক্ষের প্রভাব বিস্তার নিয়ে হামলা ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার রাতে। খবর পেয়ে ওই রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। মতুয়া সম্প্রদায়ের দু’গ্রুপের উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

জানা গেছে, ২০০৯ সালে মতুয়া সম্প্রদায়ের নেতা অসীম সমদ্দারের নেতৃত্বে নিখিল হালদার, সুধীর চন্দ্র ঘরামী, ননী গোপাল হালদার ও বিপুল হালদারসহ অন্যরা নগরীর নতুনবাজার এলাকার পরিত্যক্ত পুকুর ভরাট করে শ্রী শ্রী হরি গুরুচাঁদ মতুয়া সম্প্রদায়ের মন্দির নির্মাণ করেন। পরবর্তীতে সিটি মেয়র শওকত হোসেন হিরণ ওই মন্দিরের উদ্বোধন করার পর মতুয়া সম্প্রদায়ের লোকজন ধর্মীয় কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল। অনুষ্ঠান ও নেতৃত্ব নিয়ে নিজেদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হলে গান্ধী বড়াল, বিপুল হালদার ও কনাই কর্মকারসহ কতিপয় ব্যক্তি ২০১১ সালের শেষের দিকে একই এলাকায় আলাদা মন্দির নির্মাণ করে ধর্মীয় কার্যক্রম শুরু করেন। ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালন নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে একাধিকবার নানা অপ্রতিকর ঘটনা ঘটে। দু’পক্ষের মধ্যে সৃষ্ট বিরোধ মীমাংসার জন্য একাধিকবার উদ্যোগ নেয়া হলেও শেষ পর্যন্ত বৈঠক ব্যর্থ হয়। পূর্ব বিরোধের জেরধরে শুক্রবার দুপুরে প্রতিপক্ষ গান্ধী বড়াল, বিমল হালদার, ভাষাই কর্মকার, শিব শংকর দাসসহ অর্ধশত ব্যক্তি অসীম সমদ্দার ও তার সমর্থকদের প্রতিষ্ঠিত হরি গুরু“চাঁদ ঠাকুরের বিগ্রহ ও অন্য সরঞ্জামাদি লুট করে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত মন্দিরে রাখে। ওইদিন রাতে হামলা চালিয়ে মন্দিরে ব্যাপক ভাংচুর করা হয়। ভাংচুরের সময় হামলাকারীদের বাধা দিতে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন প্রেমানন্দ নামের একজন। খবর পেয়ে ওইরাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে পোঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এদিকে প্রতিপক্ষের হামলা, মন্দির ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনায় ওই এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ নিয়ে যে কোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কায় ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। মতুয়া নেতা স্বপন কুমার ব্যাপারী জানান, হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনায় তারা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ অস্বীকার করে প্রতিপক্ষ মতুয়া নেতা ভাষাই কর্মকার জানান, প্রতিপক্ষের লোকজনে তাদের ফাঁসাতে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের নাটক সাজিয়েছে। অপরদিকে মতুয়া সম্প্রদায়ের দু’গ্রুপের উত্তেজনার খবর পেয়ে শনিবার দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র শওকত হোসেন হিরণ। তিনি উভয়পক্ষকে শান্ত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
সূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ

No comments:

Post a Comment