প্রতিমার নিচে চাপা পড়ে ও সংঘর্ষে নিহত ৩ আহত ২৯

যুগান্তর ডেস্ক
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে বিসর্জনের সময় প্রতিমার নিচে চাপা পড়ে দু’যুবক মারা গেছে। মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে পূজার কনসার্টে সংঘর্ষে একজন নিহত এবং ৪ জন আহত হয়েছে। কক্সবাজারে গ্রামবাসী ও পূজারিদের মধ্যে সংঘর্ষে আহত হয়েছে ২৫ জন। যুগান্তর প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর

শাহজাদপুর : শাহজাদপুর উপজেলার করতোয়া নদীতে দুর্গা প্রতিমা বিসর্জন দিতে গিয়ে বৃহস্পতিবার পানিতে ডুবে দুই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এই দুই যুবক হলেন পৌরসদর এলাকার মণিরামপুর গ্রামের বিনয় বসাকের ছেলে গৌতম বসাক ও রাম বসাকের ছেলে সুমন বসাক।

প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী জানায়, বৃহস্পতিবার বিজয়া দশমীতে থানারঘাট এলাকার করতোয়া নদীতে দুর্গা প্রতিমা বিসর্জন দিতে গিয়ে প্রতিমার নিচে চাপা পড়ে ওই দুই যুবক নিখোঁজ হয়। একঘণ্টা খোঁজাখুঁজির পর প্রথমে গৌতমের লাশ এবং পরে সুমনের লাশ উদ্ধার করে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নেয়া হলে ডাক্তার তাদের মৃত ঘোষণা করে। এই মৃত্যুর খবর শহরে ছড়িয়ে পড়লে সবার মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। মুহূর্তে আনন্দ-উল্লাস শোকে পরিণত হয়।

শ্রীনগর (মুন্সীগঞ্জ) : মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে শারদীয় দুর্গা পূজার কনসার্টে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু’গ্র“পের সংঘর্ষে ধারালো ছোরার এলোপাতাড়ি আঘাতে রায়হান-উল-ইসলাম (১৭) নামের এক তরুণ নিহত ও ৪ জন আহত হয়েছে। বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে জেলার সিরাজদিখান উপজেলার রাজানগর সৈয়দপুর আবদুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে কনসার্ট চলাকালে স্থানীয় রজ্জব ও সজিবের নেতৃত্বাধীন গ্র“পের সঙ্গে এক গ্র“প ও একই উপজেলার জাহাঙ্গীরনগর কুচিয়ামোড়া থেকে আসা রায়হান-জনির গ্র“পের মধ্যে ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। রায়হান একই উপজেলার জাহাঙ্গীরনগর কুচিয়ামোড়া এলাকার মৃত আজগর আলীর ছেলে। সিরাজদিখান থানার ওসি মাহবুবুর রহমান জানান, সৈয়দপুর কৃষ্ণকলি মন্দিরের শারদীয় পূজা উদযাপন কমিটি স্কুল মাঠে ওই কনসার্টের আয়োজন করে। কনসার্টে ক্লোজআপ ওয়ান তারকা বাউল শিল্পী রিংকুর গান পরিবশেনকালে নাচানাচি ও পানি ছিটানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে রায়হানের গলায় ছোরা দিয়ে আঘাত করা হয়। রাত ১২টার দিকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে সেখানকার কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। রায়হানের বন্ধু সাকিন, জনি ও স্থানীয় গ্রুপের বায়েজিত ও সুজিতকে আহত অবস্থায় সিরাজদিখান উপজেলার ইছাপুরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

কক্সবাজার : কক্সবাজারে প্রতিমা বিসর্জন দিতে আসার সময় গ্রামবাসীর সঙ্গে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সংঘর্ষে ২৫ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় প্রতিমাবাহী ট্রাক, প্রতিমা ভাংচুর ও দু’পক্ষের মাঝে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

বৃহস্পতিবার বেলা ৩টায় রামু থেকে প্রতিমাবাহী ট্রাক সমুদ্র সৈকতে আসার পথে খরুলিয়া দরগাহ এলাকায় রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা উৎসুক মহিলা ও শিশুদের ওপর রং ছিটায় পূজারিরা। শিশুরা তখন ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করলে ঘটনার সূত্রপাত হয়। ইটের আঘাতে ১১ পূজারির মাথা ফেটে যায়। এক পর্যায়ে প্রতিমাবাহী ট্রাক দাঁড়ালে উচ্ছৃংখল এক দল যুবক প্রতিমা ও গাড়িতে হামলা চালায়। ইতিমধ্যে বিভিন্ন এলাকা থেকে পেছন থেকে আসা প্রতিমাবাহী ১৫টির মতো ট্রাক সেখানে দাঁড়িয়ে সড়কে ব্যারিকেড দেয় ও পার্শ্ববর্তী বাড়িতে পূজারিরা হামলা ও ভাংচুর করে। এতে এলাকাবাসীর পক্ষে ১৪ জন আহত হয়। পুলিশ ও স্থানীয় নেতারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। কক্সবাজার পুলিশ সুপার সেলিম মোঃ জাহাঙ্গীর জানান, ইতিমধ্যে ২ জন দুর্বৃত্তকে আটক করা হয়েছে। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আহতদের মধ্যে ছোটন পাল, নিপু ধর, তপন দাশ, কিরণ ধর, নান্টু ধর, নিপু দে, সুমন দে, তরুণ ধর, গ্রামবাসীর পক্ষে শাহা আলম, আবদুস ছালাম, জাফর আলমের নাম পাওয়া গেছে।

যুগান্তর, ০৭ অক্টোবর, ২০১১। লিংক

No comments:

Post a Comment