সংখ্যালঘু পরিবারের ওপর হামলা ॥ বাড়ি ভাংচুর লুট

নিজস্ব সংবদদাতা, কুমিল্লা, ১০ জুন ॥ বরুড়া উপজেলার আড্ডা গ্রামে বুধবার রাতে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে এক সংখ্যালঘু পরিবারের ওপর সন্ত্রাসী হামলা, বাড়ি ঘর ভাংচুর, লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে ।

জানা গেছে দক্ষিণ আড্ডা গ্রামের নারায়ণ চন্দ্র দাস গংয়ের সঙ্গে গৌরাঙ্গ চন্দ্র দাস গংয়ের বাড়ির জমি নিয়ে দীর্ঘদিন বিরোধ চলছে। এই ঘটনায় বুধবার দুপুরে নারায়ণ চন্দ্র গংয়ের পক্ষ নিয়ে পাশের বাড়ির ওহাব মিয়া গৌরাঙ্গ চন্দ্রের স্ত্রী কল্পনার সঙ্গে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে হাতাহাতি ঘটে। এ সময় কল্পনার চিৎকার শুনে তার দুই দেবর নিতাই চন্দ্র দাস ও মনু চন্দ্র দাস ঘটনাস্থলে এসে ওহাব মিয়ার ওপর চড়াও হলে সে আহত হয়। পরে ওহাবের তিন পুত্র সুমন, মনির ও মুক্তার বহিরাগত সন্ত্রাসী নিয়ে রাতে গৌরাঙ্গের বাড়িতে হামলা চালায়। এতে গৌরাঙ্গ চন্দ্র, নিতাই চন্দ্র, কল্পনা রানী দাস, মনু চন্দ্র দাস, মিনতি রানী দাস, অমিতা রানী দাস, সঞ্জয় চন্দ্র দাস, মানিক চন্দ্র দাস, রিপন চন্দ্র দাস, অঞ্জলী রানী দাস, তরু রানী দাস, লিটন চন্দ্র দাসসহ প্রায় ২০ জন আহত হয়। গুরুতর আহতরা বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ সময় হামলাকারীরা ওই বাড়ির গৌরাঙ্গ চন্দ্র দাস, নিতাই চন্দ্র দাস ও মনু চন্দ্র দাসের বাড়িঘর ও আসবাবপত্র ভাংচুর করে এবং ঘরে থাকা নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ও বিভিন্ন ধরনের মূল্যবান মালামালসহ গোয়ালের গরু লুট করে নিয়ে যায়। এছাড়া ওই পরিবারের ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ অমিতা রানী দাসের পেটে লাথি মারলে তার মারাত্মক রক্তক্ষরণ হয়। বর্তমানে ভয় ও আতঙ্কে সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্যরা বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। এই সময় সন্ত্রাসীরা নিতাই চন্দ্র দাসকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। কল্পনা রানী দাস জানান, ওহাব মিয়া মদ খেয়ে আমাদের গালিগালাজ করলে আমার দেবররা এসে তাকে বাধা দিলে ঘটনার সূত্রপাত ঘটে। এ বিষয়ে বরুড়া থানায় মামলা হয়েছে।

ওই পরিবারের সদস্য মানিক চন্দ্র দাস জানান, ৪/৫ দিন আগে বিয়ে করেছি, শ্বশুরবাড়ি থেকে পাওয়া উপহার সামগ্রী সন্ত্রাসীরা নিয়ে যায়। খবর পেয়ে রাতে বরুড়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওহাব মিয়ার বাড়ি থেকে হাত বাঁধা অবস্থায় নিতাইকে এবং লুট হওয়া ৩টি গরু ও ১টি কম্বল আবদুস সাত্তারের ঘর থেকে উদ্ধার করেছেন। এই ঘটনায় পুলিশ রাতে ওহাব মিয়ার পুত্র সুমন মিয়াকে গ্রেফতার করে। বরুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ ফারুক হোসেন বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আশ্বস্ত করেন।

দৈনিক জনকণ্ঠ, ১১ জুলাই, ২০১০

No comments:

Post a Comment