পটিয়ায় শ্মশানের জমি বেদখল

সংবাদদাতা, পটিয়া, চট্টগ্রাম।।

পটিয়ায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৩৫ শতক শ্মশান ভূমি দখল করে নিয়েছে প্রভাবশালীরা। হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়ালেও রহস্যজনক কারণে কেউ এগিয়ে আসেনি। উপজেলার ধলঘাট ইউনিয়নের ক্যাম্প এলাকায় শ্মশানের এ ৩৫ শতক জায়গা দখল করে রেখেছে স্থানীয় প্রভাবশালী চিহ্নিত মহল। সন্ত্রাসীদের হাত থেকে বেহাত হওয়া এ শ্মশান ভূমি উদ্ধারে প্রধানমন্ত্রী ও স্থানীয় এমপির হস্তক্ষেপ দাবি করেছে স্থানীয়রা।

অনুসন্ধান নিয়ে জানা গেছে, ধলঘাট ইউনয়নের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শ্মশানের ভূমি ১৯৭৬ সালে স্থানীয় ভূমি অফিসের কতিপয় দুর্নীতিবাজের সহায়তায় প্রভাবশালী দুই ব্যক্তি অবৈধভাবে লীজ নেয়। বিষয়টি ফাঁস হয়ে গেলে হিন্দু সম্প্রদায়ের পক্ষে আবেদনের প্রেক্ষিতে এ. ডি. সি. (রাজস্ব) চট্টগ্রাম ২০০৭ সালের ১৫ আগস্ট তারিখে লিজকৃত শ্মশান ভূমি উচ্ছেদের জন্য বলা হয়। এরই প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহীন কর্মকর্তা ২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর তারিখে লিজ বাতিল করেন। পরবর্তীতে এ. ডি. সি. (রাজস্ব) চট্টগ্রাম বরাবরে দখলবাজরা লিজ বাতিলের বিরুদ্ধে আপীল করেন। কিন্তু বার বার তদন্ত রিপোর্টে শ্মশান ভূমি শনাক্ত হওয়ায় উচ্ছেদের জন্য বলা হলেও দখলবাজরা তা কর্ণপাত করছে না। অন্যদিকে ২০০৯ সালের ২৭ জুলাই তারিখে ঢাকার ভূমি আপীল বোর্ড (শাখা-৪) বরাবরে লীজ বাতিলের বিরুদ্ধে আপীল আবেদন করে লিজ গ্রহীতারা। কিন্তু নথি পর্যালোচনাপূর্বক সিনিয়র সহকারী সচিব আয়েশা আক্তার, ভূমি আপীল বোর্ড, ঢাকা ৪-৬৪/২০০৯ (ভিপি) আপীল, চট্টগ্রাম/৪৮৩ (৫) তারিখ-৩০-০৭-২০০৯ ইং মূলে বলছেন নালিশী সম্পত্তি স্বীকৃত মতে ভিপি সম্পত্তি। বন্দোবস্তকৃত দাগের মধ্যে শুধুমাত্র ৩২৮২ দাগের জমি আর, এস, পি, এস ও বি, এস রেকর্ডে শ্মশান শ্রেণির জমি হওয়ায় ভূমি ব্যবস্থাপনা ম্যানুয়ালের ২৭৩ নং অনুচ্ছেদ মোতাবেক বন্দোবস্তযোগ্য নয় এবং এডিসি (রাজস্ব), অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এর আদেশ বহাল রেখে দখলবাজদের আপীল নামঞ্জুর করেন। এরপরও শ্মশানের ভূমি অবৈধ দখলমুক্ত করা যাচ্ছে না। এতে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদও প্রশাসনের নিরবতার নিন্দা জানিয়েছে।

দৈনিক জনকণ্ঠ, ১৬ আগস্ট, ২০০৯

No comments:

Post a Comment