দোহারে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে সংখ্যালঘু পরিবারের জমি দখলের অভিযোগ

দোহার-নবাবগঞ্জ (ঢাকা) সংবাদদাতাদোহারের নারিশা পূর্বচর গ্রামে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে ও বালু ফেলে হিন্দু পরিবারের জমি দখলের চেষ্টা চলছে : নয়া দিগন্ত

উপজেলার নারিশা পূর্বচর গ্রামে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে সংখ্যালঘু হিন্দু পরিবারের জমি দখল ও হামলার অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, নারিশা পূর্বচর গ্রামে দীর্ঘ প্রায় ১০০ বছর ধরে বংশানুক্রমে জমি ভোগদখল করছেন নৃপেন মালাকার। কিন্তু রাতারাতি ভুয়া কাগজপত্র ও জাল দলিল তৈরি করে জমিতে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছে স্খানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। তারা বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে পরিবারটিকে জমি থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা চালাচ্ছে।

নৃপেন মালাকার অভিযোগ করেন, সিএস রেকর্ডে এই সম্পত্তির মালিক ছিলেন অলঙ্গামনি দ্যাসা ও লক্ষ্মী নারায়ণ সাহা। আমার দাদা মুক্তারাম মালাকার জমিদার লক্ষ্মী নারায়ণ সাহার বাড়িতে মালাকার হিসেবে কাজ করার কারণে আমার দাদাকে বসবাস ও ভোগদখল করার জন্য জমিটিকে চাকরান সম্পত্তি হিসেবে প্রদান করেন ও সম্পত্তির দখল বুঝিয়ে দেন। আমার দাদা মুক্তারাম মালাকার মৃত্যুবরণ করলে তার একমাত্র পূত্র হিসেবে আমার বাবা যদুনাথ মালাকার জমিটি ভোগদখল করেন। পরবর্তী সময়ে আমার বাবার মৃত্যুর পর জমিটি আমি ভোগদখল করছি। এভাবে প্রায় ১০০ বছর ধরে জমিটিতে আমরা বসবাস করছি। পরে লক্ষ্মী নারায়ণ সাহা ও তার ওয়ারিশরা ১৯৬৫ সালের কিছু সময় আগে ভারত চলে গেলে জমিটি অর্পিত ও অনাবাসিক সম্পত্তি হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়। পরে আমি জমিটি সরকারের কাছ থেকে লিজ নিয়ে নিয়মিত লিজ মানি পরিশোধ করে শান্তিপূর্ণভাবে পরিবার নিয়ে বসবাস করছি। নৃপেন মালাকার আরো জানান, কিছু দিন ধরে স্খানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি ফজলুর রহমান, মোহাম্মদ আলী, আহাম্মদ আলী গং ভুয়া দলিল ও কাগজপত্র তৈরি করে অর্থের প্রভাব খাটিয়ে আমাদের উচ্ছেদের জন্য সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিচ্ছে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে তাদের অত্মীয় জিকু ও তার দলবল আমার পরিবারের ওপর কয়েক দফা শারীরিক অত্যাচার করেছে। ভয়ে আমরা প্রতিবাদ করতে পারছি না। এই জমি না ছাড়লে আমাদের মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। আমার বসতবাড়ির ভেতর থেকে গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে। সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে জমি ছাড়ার জন্য আমাকে বিভিন্নভাবে আলটিমেটাম দিচ্ছে। জিকু ও তার দলবল বাড়ির ভেতরে বালু ফেলছে। এ ব্যাপারে কোর্ট ইনজাংকশন জারি করলেও সেটিকে অমান্য করে তারা তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। আমি নিরুপায় হয়ে গত ৪ জুলাই দোহার থানায় একটি মামলা করেছি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মিন্টু জানান, আদালত নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জবরদখল ও বিভিন্ন অভিযোগে জিকু (৩৩) ও অজ্ঞাত চার-পাঁচজনকে আসামি করে একটি মামলা করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান চলছে।

ঘটনার বিষয়ে অপর পক্ষ ফজলুর রহমান, আহাম্মদ আলী ও জিকুর সাথে একাধিকবার মোবাইলে যোগাযোগ করলে জিকু জানান, আমি আহাম্মদ আলী ও ফজলুর রহমানদের কাছ থেকে জায়গাটি ভাড়া নিয়ে ইট-বালুর ব্যবসা করছি।

সূত্র: দৈনিক নয়াদিগন্ত, ১১ জুলাই, ২০০৯

No comments:

Post a Comment