মনোহরগঞ্জে ৭টি সংখ্যালঘু পরিবার বিতাড়িত : ঘরবাড়ি জবরদখল

মনোহরগঞ্জের হাতীমারা গ্রামের সংখ্যালঘুরা একটি সন্ত্রাসী বাহিনীর হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে ৭টি পরিবারকে বাড়ি থেকে বিতাড়িত করে জায়গাজমি জবরদখল করে নিয়েছে। সর্বশেষ গত রোববার একটি মামলার তদন্ত চলাকালে সন্ত্রাসীরা তাদের ওপর বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

গত রোববার সকালে সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্যরা লাকসাম সেটেলমেন্টে একটি আপিল মামলার বাদি পক্ষ হিসেবে তাদের বক্তব্য প্রদানের জন্য তদন্ত অনুষ্ঠানে উপস্খিত হলে প্রতিপক্ষের লোকজন তাদের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়। পরে সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্যরা অনুষ্ঠানস্খল থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। এ ব্যাপারে কাশিচন্দ্র দেবনাথ মনোহরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এদিকে হামলার সময় দুই তদন্ত কর্মকর্তাও তদন্ত অসম্পূর্ণ রেখে চলে যান।

মামলার তদন্ত চলাকালে সন্ত্রাসীদের হামলা

জানা গেছে, ষোল বছর আগে হাতীমারা। গ্রামের এক প্রভাবশালী তৎকালীন স্খানীয় আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল মান্নান খান ও তার ভাই আবদুল জব্বার খান একই গ্রামের কাশিচন্দ্র দেবনাথ, লালিত মোহন দেবনাথ, বলরাম চন্দ্র দেবনাথ, সুজন চন্দ্র দেবনাথ, জগদীশ চন্দ্র দেবনাথ, শ্রীধাম চন্দ্র দেবনাথসহ দু’টি বাড়ির সাতটি পরিবারের সদস্যদের অস্ত্রের মুখে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে বাড়িঘরসহ প্রায় দশ একর সম্পত্তি দখল করে নেয়। দীর্ঘ সময়েও নির্যাতিত লোকজন এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ অনেকের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোন প্রতিকার পায়নি। অবশেষে ১/১১ এরপর ২ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা জেলা জজ অধিক্ষেত্রভুক্ত আদালতের ললিত মোহান দেবনাথ ও কাশিচন্দ্র দেবনাথ একটি মামলা করেন।

হাতীমারা গ্রামের নব্বই বছর বয়সের বৃদ্ধ হাছান আহম্মদ জানান, প্রায় ১৬ বছর আগে মন্নান খান ও জব্বার খানের নেতৃত্বে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী কাশি দেবনাথ এবং বলরাম দেবনাথসহ দু’টি সংখ্যালঘুর বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাদের বের করে দেয় এবং বাড়িঘর ও কৃষি জমি জোরপূর্বক দখল করে নেয়। একই গ্রামের সৈয়দ আহম্মদ মজুমদার (৬৫) জানান, সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্যদের ওপর মান্নান খান ও জব্বার খানের সন্ত্রাসীবাহিনীর অত্যাচার নির্যাতন ৭১ সালের পাক হানাদারদের বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। তাদের বর্বরতার হাত থেকে সংখ্যালঘু পরিবারের তরুণীরাও রক্ষা পায়নি। একই কথা জানান, হাতীমারা গ্রামের মোস্তফা কামাল, জাফর আহম্মদ, কাজী সিরাজুল ইসলাম ও আবুল হাসেম (৬৫)। এ ব্যাপারে মহোহরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইউনুছ আলী জানান, গত রোববার কাশিচন্দ্র দেবনাথ একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।

সংবাদ, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০০৯

No comments:

Post a Comment