মহেশখালী- কুতুবদিয়া- সংখ্যালঘুদের ভোট ঠেকাতে জামায়াত শিবিরের তাণ্ডব

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার।।
কক্সবাজারের মহেশখালী-কুতুবদিয়া দ্বীপে জামায়াত-শিবিরের বহিরাগত ক্যাডাররা তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে। তারা দ্বীপের সংখ্যালঘুদের হুমকি ধমকি দিয়ে যাচ্ছে, যাতে আগামীকাল সোমবার ভোটকেন্দ্রে না যায়। এমনকি ভোটকেন্দ্রে যাওয়া থেকে বিরত রাখার কৌশল হিসাবে ভীতি ছড়াতে এক সংখ্যালঘুর ঘরে শুক্রবার রাতে মহেশখালী দ্বীপের মাতারবাড়ীতে ক্যাডাররা আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। ইতোমধ্যে দ্বীপ দু'টিতে অবস্থান নিয়েছে কয়েক হাজার জামায়াত শিবির নেতাকর্মী ও ক্যাডার। বৃহত্তর চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থান থেকে জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা গিয়ে জড়ো হয়েছে মহেশখালী ও কুতুবদিয়া দ্বীপে। এ দ্বীপ দু'টি নিয়ে গঠিত জাতীয় সংসদের কক্সবাজার-০২ আসনটি। এ আসনে মহাজোটের প্রার্থী হয়েছেন দেশের বিশিষ্ট পরিবেশ বিজ্ঞানী ড. আনসারুল করিম। অপরদিকে ৪ দলীয় জোটের তরফে প্রার্থী হয়েছেন জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর সেক্রেটারী হামিদুর রহমান আজাদ।

বৃহত্তর চট্টগ্রামে জামায়াতের ৩টি আসনের মধ্যে এটি অন্যতম, যা কিনা জামায়াতের জন্য এ আসন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। কেননা প্রার্থী হামিদুর রহমান আজাদ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলেন। তিনি বর্তমানে কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে জড়িত। দলে তার রয়েছে আন্তর্জাতিক যোগাযোগ। সারাদেশে জামায়াতের ৩৮টি আসনের মধ্যে এ আসনটিকে দলীয়ভাবে অন্যরকমের গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। এ জন্যই জামায়াত-শিবির মরিয়া হয়েও এ আসনে তেমন সুবিধা করতে না পেরে তারা বিজয়ের জন্য ভিন্ন পথ বাছাই করে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আসনটির ভোটের সংখ্যা ২ লাখ ২৫ হাজার। তন্মধ্যে মহেশখালী দ্বীপে ১ লাখ ৬১ হাজার এবং কুতুবদিয়া দ্বীপে ৬৪ হাজার ভোটার। জামায়াত প্রার্থী হামিদুর রহমান আজাদ কুতুবদিয়া দ্বীপের স্থায়ী বাসিন্দা আর আওয়ামী লীগ তথা মহাজোট প্রার্থী ড. আনসারুল করিমের বাড়ী মহেশখালী দ্বীপে। মহেশখালী দ্বীপে ভোটার সংখ্যা বেশী হবার কারণে সেই দ্বীপের বাসিন্দা মহাজোট প্রার্থী ড. আনসারুল করিমের বিজয় নিশ্চিত ভেবেই জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা ওই দ্বীপে হামলে পড়েছে। তদুপরি দ্বীপটিতে প্রায় ৩৪ হাজার সংখ্যালঘু ভোটার রয়েছে। ক্যাডাররা এ সব সংখ্যালঘুকে টার্গেট করেই সেখানে এক প্রকারের তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে। এমনকি দ্বীপে ঘরে ঘরে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানোর জন্য জামায়াতের মহিলা কর্মীদের ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে।

ওদিকে শুক্রবার রাতে মহেশখালীর মাতারবাড়ী ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি ডা. মিলন কান্তি সুশিলের বাড়ীতে কে বা কারা আগুন ধরিয়ে দেয়। স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মীরা এ ঘটনার নেপথ্যে জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছে। তবে ডা. মিলন কান্তি সুশিলের সন্দেহ এমন সময়ে এ ধরণের ঘটনা ঘটালে প্রতিপক্ষ রাজনীতিকদের কাঁধে চড়িয়ে দেয়া সহজ হবে মনে করেই হয়তবা কেউ এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, এমনিতে বাবরি মসজিদ ঘটনার সময় তার পাড়ার ১১টি সংখ্যালঘু বাড়ী পুড়িয়ে দেয়া হয়েছিল।

ওদিকে কুতুবদিয়া দ্বীপেও নির্বাচনকে সামনে নিয়ে জামায়াত-শিবির ক্যাডাররা গিজ গিজ করছে। আসনটিতে জামায়াত প্রার্থী বিজয়ের লক্ষ্যে বড় ধরণের সহিংস ঘটনার আশ্রয় নিতে পারে বলেও অনেকেই সন্দেহ করছেন।

দৈনিক জনকণ্ঠ, ২৮ ডিসেম্বর, ২০০৮

No comments:

Post a Comment