রথ যাত্রা শুরু হয়েছে

রথ যাত্রা শুরু হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের কয়টি পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠাতে এই খবরটি স্থান পেয়েছে? একটিতেও না। কেন? তা বোঝা কঠিন নয়।

ভোরের কাগজ আজকের পত্রিকায় লিখেছে:-
রাজধানীতে বর্ণাঢ্য রথযাত্রা উৎসব শুরু

কাগজ প্রতিবেদক : নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে গতকাল শুক্রবার থেকে রাজধানীতে রথযাত্রা অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। এ উপলক্ষে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ ধর্মীয় অনুষ্ঠানের পাশাপাশি বিভিন্ন মন্দির থেকে বর্ণাঢ্য শোভা যাত্রা বের করে।
জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার রামসীতা মন্দির কমিটির উদ্যোগে জয়কালি মন্দির এলাকা থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি নগরীর বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ শেষে রামসীতা মন্দির প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়। রামসীতা মন্দির কমিটির সভাপতি গণেষচন্দ্র ঘোষের নেতৃত্বে এ শোভাযাত্রায় হিন্দু সম্প্রদায়ের সহস্রাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করে। শোভাযাত্রা শেষে মন্দির প্রাঙ্গণ থেকে সবাই প্রসাদ গ্রহণ করে।
এ ছাড়া রাধা মাধব জিও দেব বিগ্রহ মন্দির রথযাত্রা উপলক্ষে গতকাল থেকে তিন দিনব্যাপী ধর্মীয় অনুষ্ঠান শুরু করেছে। ধর্মীয় সঙ্গীত, মহাপ্রসাদ বিতরণ ও ধর্মীয় আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে রথযাত্রা অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়। সকাল থেকেই শত শত নরনারী মন্দিরে এসে পূজা-অর্চনা করে।
পুরান ঢাকার ঠাটারীবাজার শিব মন্দিরে রথযাত্রা উপলক্ষে ভোগ, কীর্তন, গীতা পাঠসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুরূপ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ৮৪ নং বনগ্রাম রোডের রাধা গোবিন্দ জিও ঠাকুর মন্দির কমিটি।


আজকের তারিখের প্রথম আলো লিখেছে:-
ধামরাইয়ে ঐতিহ্যবাহী যশোমাধবের রথযাত্রা উৎসব শুরু
দেশজুড়ে বর্ণাঢ্য শোভযাত্রা
নিজস্ব প্রতিবেদক
শ্রীশ্রী জগন্নাথ দেবের জন্নবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীসহ সারা দেশে গতকাল শুক্রবার ঐতিহ্যবাহী রথযাত্রা উৎসব শুরু হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় আয়োজনটি হচ্ছে ধামরাইয়ে। সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী ধামরাইয়ের ঐতিহ্যবাহী যশোমাধবের রথযাত্রা উৎসবের শুভ উদ্বোধন করেন।
রাজধানীতে ৫০০ বছরের পুরোনো সুত্রাপুরের রামসীতা মন্দির কমিটির উদ্যোগে বিশাল রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। এতে নেতৃত্ব দেন মন্দির কমিটির সভাপতি গণেশ চন্দ্র ঘোষ। রথযাত্রা শেষে মন্দির প্রাঙ্গণে হাজার হাজার নারী-পুরুষ প্রসাদ নেয়। এ ছাড়া পুরান ঢাকার শ্রীশ্রী রাধামাধব জিও দেববিগ্রহ মন্দির, ঠাটারীবাজার শিবমন্দির এবং রাধাগোবিন্দ জিও ঠাকুর মন্দিরে রথযাত্রা, আলোচনা, ধর্মীয় সংগীত পরিবেশন, গীতাপাঠ ও মহাপ্রসাদ বিতরণের আয়োজন করা হয়। হিন্দু ধর্মে জগন্নাথ দেব হলেন পাপ মোচনকারী বিষ্ণু অবতার।
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, ধামরাইয়ে বিকেল সাড়ে পাঁচটায় মঙ্গলপ্রদীপ জ্বালিয়ে নয় দিনব্যাপী উৎসবের সুচনা করা হয়। সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা সন্ধ্যা ছয়টার দিকে প্রতীকী রশি টেনে রথযাত্রার শুভ উদ্বোধন করেন। এর আগে সকাল ১০টায় পৌর এলাকার তায়েকপাড়ার মাধবমন্দিরের প্রধান পুরোহিত উত্তম গাঙ্গুলী রথখোলা আঙিনায় ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান শেষ করেন। বিকেল পাঁচটার দিকে মাধবমন্দির থেকে মাধববিগ্রহ (মাধবমূর্তি) রথে বসানোর পর রথখোলার মঞ্চে শুরু হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে সংস্কৃতি উপদেষ্টা এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল সি আর দত্ত উপস্থিত ছিলেন। সভাপতিত্ব করেন মেজর জেনারেল জীবন কানাই দাস। অনুষ্ঠানে সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, ধামরাইয়ের রথযাত্রার উৎসব সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অন্যতম নিদর্শন। ধর্ম, বর্ণ ও গোত্র-নির্বিশেষে সবার জন্য এ এক আনন্দের উৎসব।
গতকাল ভক্তরা রশি টেনে যশোমাধবের রথ পৌর এলাকার গোপনগরে নিয়ে যায়। রথের এ ভ্রমণকে বলা হয় বাবার বাড়ি থেকে শ্বশুরবাড়ি যাত্রা। সেখানে নয় দিন রাখার পর রথটি আবারও মাধবমন্দিরে আনা হবে। এ উপলক্ষে ১২ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে উল্টোরথ উৎসব। রথযাত্রা উপলক্ষে ধামরাইয়ে শুরু হয়েছে মাসব্যাপী মেলা।
যশোমাধব মন্দির পরিচালনা পর্ষদের সম্পাদক রাজীবপ্রসাদ সাহা জানান, প্রায় ২০০ বছর আগে ধামরাইয়ে যশোমাধব রথযাত্রা উৎসবের সুচনা। রাজা যশোবন্ত পাল হাতিতে চড়ে ধামরাই এলাকা দিয়ে যাচ্ছিলেন। একটি মাটির ঢিবির কাছে রাজার হাতি থেমে গেলে ঢিবি খনন করে পাওয়া যায় একটি মাধবমূর্তি। রাজা এক পন্ডিতকে দায়িত্ব দেন মূর্তিটি প্রতিষ্ঠার। এরই ধারাবাহিকতায় রাজার নাম যুক্ত করে যশোমাধবের রথ উৎসব পালিত হয়ে থাকে।
চট্টগ্রাম থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, বিকেলে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শ্রীকৃষ্ণ মন্দির প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়। নগরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে রথসহ শোভাযাত্রাটি নন্দনকাননের রাধামাধব মন্দিরের সামনে এসে শেষ হয়। এরপর ডিসি হিলের উন্নুক্ত মঞ্চে কীর্তন, ভজন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) রথযাত্রা উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী এ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করে।


লক্ষ্য করার বিষয় হল একটা খবরের সাথেও রথযাত্রার কোন ছবি নেই।

না! অবাক আর হই না। মনখারাপও লাগে না। এটাই স্বাভাবিক। এটাই বাস্তবতা। এটাই ইসলামিক রাষ্ট্র। বাংলাদেশের হিন্দুদের সত্যিকার সম্মান।

No comments:

Post a Comment