শিক্ষকদের জবানবন্দী, উপদেষ্টার ছলচাতুরি, তারেক রহমানের ভেলকিবাজি আর সিঁদুরবিহীন ভোটার আইডি

শিক্ষকদের জবানবন্দী, উপদেষ্টার ছলচাতুরি, তারেক রহমানের ভেলকিবাজি আর সিঁদুরবিহীন ভোটার আইডি

সদেরা সুজন

১. যাঁরা দেশকে ভালোবাসেন, যাঁরা মানুষ-মাটি ও প্রকৃতিকে ভালোবাসেন, যাঁরা ধর্মান্ধ মৌলবাদ ও যুদ্ধাপরাধীকে ঘৃণা করেন, যাঁরা স্বাধীনতা মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তমনকে হৃদয়ে ধারণ করে রাখেন, যাঁরা ইতিহাসকে সঠিক পথে চালান, যাঁরা মানবিক-মানবাধিকারের পক্ষে কথা বলেন, যাঁরা সত্য-সৎ ও সুন্দরের পূজারী এবং যাঁরা সৃষ্টিশীল কাজে ব্যাপ্ত রাখতেন জীবন, কেন যেন এমন শ্রেষ্ঠ মানুষগুলো বড্ড অসময়ে চলে যাচ্ছেন আমাদের মাঝ থেকে।

অপ্রতিরোধ্য বাঁধভাঙ্গা অশ্রুজল, ফুলেল ভালোবাসা-অকৃতিম শ্রদ্ধায় অসময়ে চির বিদায় নিলেন বাংলা নাটকের প্রতিভাদিপ্ত নক্ষত্র নাটকের অন্যতম দিকপাল অধ্যাপক, কবি সেলিম আল দীন। আমরা এই ক’দিনে একের পর এক হারালাম বাংলাদেশের আকাশের উজ্জ্বল নক্ষত্রদের, ৫২-এর মহান ভাষা আন্দোলনের প্রথম কবিতার কবি ও ভাষা সৈনিক মাহবুব উল আলম চৌধুরী, ভাষা সৈনিক প্রবীন সাংবাদিক ফজলুল করিম, স্বাধীনতা মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সৈনিক ধর্মনিরপেক্ষতা- বাঙালি জাতিয়তাবাদ ও গণতন্ত্রের প্রগতির দিকপাল প্রবাদ পুরুষ বিচারপতি কে এম সোবহান, প্রবীন ফটো সাংবাদিক বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং বঙ্গবন্ধুর ফটোগ্রাফার মোহাম্মদ আলম এবং খ্যাতিনামা শিল্পী সঞ্জীব চৌধুরী। এঁরা সবাই ছিলেন বাংলাদেশের আলোকবর্তিকা, সমহিমায় দিপ্যমান। দু:খিনী বাংলার আকাশ থেকে বড্ড অসময়ে হারিয়ে যাওয়া এসব আলোক জ্যুতির জন্য শোক জানাবার ভাষা নেই, শুধু দিনের পর দিন কষ্টের পাহাড় জমে জমে বিশাল পর্বত হচ্ছে, কষ্টে কষ্টে অপ্রতিরোধ্য চোখের জলে ভেসে যাচ্ছে আমার প্রবাস জীবন।

রাজনৈতিক হত্যাকান্ড, মৌলবাদের তান্ডব, সামরিক শাসকদের আষ্ফালন এবং বেঈমান বিশ্বাস ঘাতকদের উর্বর উপত্যকা থেকে প্রগতিশীল সত্য ও সুন্দরের পূজারী ভালো মানুষ কেন যে এত তাড়াতাড়ি চলে যাচ্ছে আর স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকাররা শত বর্ষ আয়ু পাচ্ছে... বাংলাদেশে একের পর এক অস্বাভাকি বেদনাদায়ক শোকাবহ সাগরসম কষ্টের দৃশ্য দেখতে দেখতে ভাবি এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশটা সৃষ্টি হয়েছিলো বুঝি ঘাতক বেঈমান বিশ্বাসঘাতক হায়েনা ধর্মান্ধ-মৌলবাদ স্বৈরাচারীদের জন্য ।

২. সম্প্রতি বাংলাদেশের তত্ত্বধায়ক সরকারের উপদেষ্টাদের চার জন হারাধন উপদেষ্টা নিজের ব্যর্থতা ও গ্লানী নিয়ে বিদায় নেবার পর বাকী হারাদনদেরর একজন উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব:) এম এ মতিন রাগে গোস্বায় গিয়ে দেখা করেন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে পদ বন্টন ও ক্ষমতা না বাড়ালে তিনি পদত্যাগ করবেন বলে হুমকি দেন, অসহায় হারাদন প্রধান উপায় না দেখে দেশের সবচেয়ে ক্ষমতাধর পদ ( যে পদে থেকে ইচ্ছামত ক্ষমতার অপব্যবহার করে আইন নিয়ন্ত্রণকারীদের ব্যবহার করা যায়, মিথ্যাকে সত্য হিসেবে প্রতিষ্টা করা যায়, ক্ষমতার আস্ফালনে খুণিদেরকে সৎ এবং সৎকে খুণি বানানো যায়, যার প্রমান আলতাফ হোসেন থেকে বাবর সেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রানালয়) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় দিয়ে দিলেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রাণালয় পাবার পরপরই তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বললেন রহস্যজনকভাবে ‘আর দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে নতুন করে ব্যবস্খা নেওয়া হবে না, কারন সরকার অভার লুডেড’। দেশে-বিদেশে কোটি কোটি মানুষ এ বক্তব্য শুনে ঘৃনায় প্রত্যাখান করেছে, তাঁর অসৎ দুরবিসন্ধি নিয়ে কথা তুলেছে, সদ্য পদত্যাগকারী উপদেষ্টা জামাত নেতা ব্যারিষ্টার মইনুল হোসেনের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার জন্য তিনি এ কথা বলছেন বলে সবাই মনে করে। কারণ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা নেত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা হলেও যুদ্ধাপরাধী ঘাতক জামাতদের বিরুদ্ধে সুর্নিদিষ্ট ভহাবহ অভিযোগ থাকাসত্ত্বেও তাদের বিরুদ্ধে কোনই ব্যবস্খা গ্রহন হয়নি বরং এসব নরঘাতকদের বাঁচানোর জন্য একের পর এক অসৎ পথ অবলম্বন করা হচ্ছে, এসব অসৎ পথের অন্যতম সেটি। সাংবাদিকরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কথা উথাপন করলে তিনি সুকৌশলে এরিয়ে গেছেন, তিনি একার কিছু করার নেই বলে চলে যান! একার কিছু করার নেই বলে প্রতিবাদ করারও কি সাহস নেই, না-কি ক্ষমতায় থেকে জামাতকে ক্ষমতায় আনার জন্য তিনিও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রানয়ালয় গ্রহন করেছেন। অপরদিকে শুধু রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা করলেও সরকারী আমলা ও পুলিশ বাহিনীসহ সরকারী বিভিন্ন সংস্খা সর্বকালের সবচেয়ে বেশী দুর্নীতি করেলেও সুকৌশলে তাদের বাঁচানোর ব্যবস্খা করা হচ্ছে অপরদিকে তত্ত্ববধায়ক সরকারের সদ্য বিদায়ী উপদেষ্টাদের মধ্যে কারো কারো বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে এবং জনগণ তাদের বিচার দাবি করলে নতুন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা তাদের বাঁচানোর জন্য এমন চলচাতুরী করছেন বলে প্রবাসিরা মনে করছে।...। দেশে কি কোনো ভালো মানুষ এমন পদে আসবে না যারা নিজে সৎ ও সুন্দর ও প্রগতিরর পথে থেকে কখনো যারা দুর্নীতিবাজকে দমন করবে যুদ্ধাপরাধী মৌলবাদ বোমা গ্রেনেডবাজরদের বিচার করবে........!!!

৩. জরুরি আইন ভঙ্গ হয়েছে বলে ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের মানুষের কষ্টার্জিত টেক্সের বেতনভোগি কর্মচারি বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর সদস্যদের দ্বারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষক দেশ ও জাতির বিবেক সম্মানিত ব্যক্তিদের ওপর কী নির্মম নির্যাতন করা হয়েছে তা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। গত ১৭ জানুয়ারি ২০০৮ সালের সব ক’টি পত্রিকায় তা ছাপা হয়েছে। ছাত্র-শিক্ষক এবং নির্যাতিত ছাত্র শিক্ষকদের স্বজনদের মুখ থেকে প্রকাশিত ভয়ানক নির্যাতনের কথা শুনে ভাবছিলাম কী করে বলতে পারি এসব সামরিক বাহিনীর সদস্যরা গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অধিনে রয়েছে। কী করে বলতে পারি ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তে গড়া বাংলাদেশের গর্ব এই সামরিক বাহিনী? বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামরিক বাহিনীর সদস্যরা সাধারণ ছাত্র ও শিক্ষকদের ওপর যে বর্বর আচরণ নির্যাতন করেছে তা ১৯৭১ সালের দখলদার পাকি সামরিক বাহিনীর নির্যাতনের কথা মনে করে দেয়। বাংলাদেশের অসহায় মানুষের ওপর সামরিক বাহিনীর নির্যাতনের ঘটনা নতুন নয় আর সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের দৃশ্য বাংলাদেশের নিরস্ত্র অসহায় মানুষ বারবার দেখেছে, দেখেছে সামরিক বাহিনীর কিছু সংখ্যক বর্বর সদস্যরা কীকরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর পরিবারসহ জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করেছে। হত্যা করেছে বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্ণেল তাহেরসহ অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা সামরিক অফিসারকে। দেখেছে সামরিক জান্তা জিয়া এরশাদ ক্ষমতায় আহোরণ করে দেশের অসহায় মানুষ হত্যা করেছে। শত শত শহীদের রক্তের উপর পা দিয়ে স্বৈরাচারীরা ক্ষমতায় গিয়ে গণমানুষের ওপর ষ্টীমরুলার চালিয়েছে কিন্তু গণ মানুষের আন্দোলনে খড়কুটের মতো ভেসে গেছে।

৪. আমি সব সময় বলি তারেক রহমানের বর্তমান অবস্খার জন্য আমার ভীষণ কষ্ট হয়। তারেক রহমানের এমন অবস্খা হবার কথা ছিলোনা। তিনি সোনার চামচ মুখে দিয়ে রাজনীতিতে নেমেছিলেন। তারেক রহমানের পিতা জেনারেল জিয়া এবং মাতা বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ থাকলেও তারেক রহমান সত্যিই যুবরাজ হয়ে উঠতে পারতেন যদি তিনি লোভ লালসা, দুর্নীতি এবং প্রতিহিংসা থেকে নিজেকে দূরে রাখতে পারতেন। কিন্তু তিনি পারেননি। বরং তিনি যা করেছেন বাংলাদেশের ইতিহাসে অত্যন্ত দু:খজনক। জীবনের স্বর্ণালী সময়ের শুরুতেই দুর্নীতি আর ক্ষমতার অপব্যবহার করে এখন জেল থাকতে হচ্ছে। রাজনৈতিক জীবনের শুরুতেই তিনি মাতৃতুল্য নেত্রী বাংলাদেশের প্রাচীন রাজনৈতিক দলের প্রধান শেখ হাসিনাকে নিয়ে অত্যন্ত কুরুচিপূর্ন মন্তব্য করেন, শুধু কি তাই শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য তার হাওয়া ভবন এবং তার বন্ধু বিএনপি জামাতের নেতাদেরকে লেলিয়ে দেন। হাওয়া ভবন থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বাবর উপমন্ত্রিী আব্দুল সালাম পিন্টু কাজে লাগান। এমনটি হবার কথা ছিলো কি? তিনি সত্যিকারের যুবরাজ হবার কথা ছিলোনা কি? অতি সম্প্রতি তারেক আদালতে উঠে বলেছেন তাকে রিমান্ডে নিয়ে অমানষিক নির্যাতন করা হয়েছে! যেমনি কথা তেমনি কাজ? তারেক রহমান এই কথা বলার সঙ্গে সঙ্গেই তারেক রহমানের নিজস্ব পত্রিকা দৈনিক দিনকালে গত বছরে দৈনিক প্রথম আলোয় প্রকাশিত বগুড়ার বিএনপি জামাতদের রোষানলে এক রাজনৈতিক কর্মীকে চুরির অভিযোগে গ্রেফতার করে তারেক ভক্ত পুলিশ কর্মকর্তা বর্বরোচিত অত্যাচার করে সেই হিন্দু সংখ্যালঘু যুবক রতনকে রিমান্ডে তারেক রহমান হিসেবে দেশে বিদেশে প্রচার করে তারেক রহমানের পত্রিকা দৈনিক দিনকাল। এটা ছিলো তারেক রহমানের জন্য সবচেয়ে দু:খজনক। তারেক রহমানকে নিয়ে এমন মিথ্যাচার করার প্রয়োজন ছিলোনা, এমন স্বস্তা আবেগ নেবার প্রয়োজন ছিলোনা। কারণ দেশের আবালবৃদ্ধাবণিতা জানেন তারেক রহমানকে রিমান্ডে নিয়ে কখনই নির্যাতন করবেনা কারণ দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে যারা রয়েছেন তারা সবাই তারেক প্রেমিক। তারেক আদালতে ওটে শুধু জনগণের স্যামপ্যাথি পাবার জন্য এমন উক্তি করেছেন। দৈনিক দিনকালের জন্য তারেক রহমানের উক্তি বুমেরাং হলো। ......এটা শুধু তারেক রহমানের লজ্জ্বা নয় লজ্জ্বা তবাৎ বাংলাদেশের মানুষের জন্য।

পত্রিকায় একটি সংবাদ ছাপা হয়েছে, যা অনেকেই হয়তো তা দেখেও দেখেননি, কিংবা দেখেও না দেখার ভান করেছেন। অথচো সেটা এসময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ বলে আমি মনে করি। সিঁদুরবিহীন আইডি কার্ড। বর্তমান তত্তব্বধায়ক সরকারের আমলে বর্তমান নির্বাচন কমিশানের অধিনে নতুন ফটো ভোটার আইডি করাতে হিন্দু ভোটারদেরকে হিন্দু পরিচয়ে ভোটার আইডি হওয়াতে বাধা দিয়েছে নির্বাচন কমিশনের কর্মচারীরা। প্রতিটি সরকার যদি এভাবে নির্যাতন করে সংখ্যালঘুদেরকে, তাহলে সংখ্যালঘুরা যাবে কোথায়?

পৃথিবীর জঘন্য অপরাধ কোনটি? খুন, ধর্ষণ না চাঁদাবাজি? বাংলাদেশেরে বর্তমান তত্ত্ববধায়ক সরকারের আমলে দেখা যায় খুন ও ধর্ষণে বোমবাজি, মৌলবাদিদের গ্রেনেড হামলার চেয়ে চাঁদাবাজির মামলাকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে । সেটা শুধুই রাজনৈতিক প্রতিহিংস্বা কিংবা হাস্যকর নয় কি? সংখ্যালঘুদেরকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার জন্য বিএনপি জামাত কিংবা তত্ত্ববধায়ক সরকারের আমলে কি কম ষড়যন্ত্র হচ্ছে? বাংলাদেশের স্বাধীনতা মুক্তিযুদ্ধে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্খ এবং প্রানহানী হয়েছিলো সংখ্যালঘুদের। পাকি সামরিক বাহিনী আর এদেশের জারজ সন্তান রাজাকার আলবদর আলসামসরা প্রথমেই খুঁজতো কারা হিন্দু? অথচো বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামে সংখ্যালঘুরা জীবনপ্রণ সংগ্রাম করেছে শহীদ হয়েছে সমানভাবে। ২০০১ সালের নির্বাচনের সময় দেখা যায় কোনো সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কাউকে নির্বাচনী কাজে ব্যবহার করা হয়নি অথচো ইসলামী ব্যাংকসহ মৌলবাদি সংগঠনের নেতা কর্মীদেরকে নির্বাচনী কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। ২০০১ সালের নির্বাচনের পূর্বে এবং পরে অপ্রতিরোধ্যভাবে নির্যাতন করা হয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর। বিবিসিসহ তাবৎ বিশ্বের পত্রিকায় তা ছাপা হয়েছে। ২০০১ সালের নির্বাচনে দেশের প্রতিটি স্খানে সংখ্যা লঘুদের ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নেমে আসে বিএনপি জামাতদের অমানুষিক নির্যাতন, বাবার সামনে মেয়েকে ধর্ষণ, শিশু কন্যার সামনে মাকে ধর্ষণ, স্বামীর সামনে স্ত্রীকে ধর্ষণ, ভাইয়ের সামনে বোনকে ধর্ষণ, ৪ বছরের শিশু থেকে ৬০ বছরের বৃদ্ধা অন্ধ প্রতিবন্ধি কেউ রেহাই পায়নি বিএনপিজামাত নামের দানবের হাত থেকে, লাখো লাখো সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষকে বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছিলো, সহায় সম্মত্তি লুট করে নিয়েছিলো, কয়েক হাজার মানুষ জীবন বাঁচানোর জন্য ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলো, সেটাতো সেদিনের কথা। পূর্ণিমা, বাসন্তি, ছবিরাণীর মতো শতো শতো কিশোরী-যুবতী নারীকে গ্যাংগ র‌্যাপ করেছিলো বিএনপিজামাতের ঘাতকরা তাদের বিচার করেনি কোনো সরকার, না বিএনপি জামাত সরকার, না বর্তমান তত্ত্ববধায়ক সরকার। সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনারের আমলে কোনো সংখ্যালঘু নির্বাচন পরিচালনার জন্য কোন দায়িত্ব পায়নি ঠিক একইভাবে বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছহুল হোসেনের আমলেও, তাহলে পার্থক্য কোথায়। সবাই একই মন মানষিকতায় চলছে। বিএনপিজামাত ঘরনার প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নিয়োগপ্রাপ্ত জেলা-উপজেলা নির্বাচনী কর্মকর্তারা এখনো বহাল তবিয়তে আছে, তারাই বর্তমান নির্বাচন পরিচালনা করছে, সুতরাং তাদের কাছে সিঁদুর পড়া কোনো হিন্দু বধু কিংবা সংখ্যালঘু পরিচয়ে গেলে তাদেরকি নির্বাচনী আইডি কার্ড করতে দেবে? এরাতো জামাতবিএনপির বির্জ থেকে জন্ম। জামাতবিএনপিকে ক্ষমতায় নেওয়াইতো তাদের মূল কাজ। বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার কি নিরপেক্ষ? সিলেটের মানুষ যাঁরা তাঁকে চিনে বলে দিতে পারবে। তাঁর স্বজনরা জামাত ঘরণীর। তিনি নিজেও জামাত সমর্থিত। বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে ইন্টারনেটে ইউ টিউবে দেখা যায় ছাত্র শিবিরের অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে। সুতরাং জামাত নেতার কাছ থেকে জাতি কি করে নিরপেক্ষ নির্বাচন দাবি করে, কিংবা আশা করে! বেশী দূরে যাবার দরকার নেই, প্রিয় পাঠক দেখুন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলের কথা না হয় বাদই দিলাম তত্ত্ববধায়ক সরকারের আমলে ক’জন উপদেষ্টা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের? সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের কী কোনো যোগ্যতা নেই? অতি সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা ড. ফখরুদ্দীন আহমদের আরো দুইজন বিশেষ সহকারী নিয়োগ দিয়েছেন। এরা হলেন: বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মাহবুব জামিল ও সাবেক সচিব মানিক লাল সমাদ্দার। মাহবুব জামিলকে মন্ত্রীর মর্যাদায় স্খান পেলেও ও মানিক লাল সমাদ্দারকে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা দেয়া হয়েছে। পাঠক আপনারাই বিচার করুন?

সদেরা সুজন, ফ্রি ল্যান্স সাংবাদিক

ব্রোসার্ড, ২২.১.২০০৮

প্রথম প্রকাশ: এন ওয়াই বাংলা

No comments:

Post a Comment